চণ্ডিগড় বিতর্কে উত্তপ্ত পাঞ্জাব, কেন্দ্রকে আক্রমণ

চণ্ডিগড়কে রাষ্ট্রপতির প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে আনার কেন্দ্রের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে পাঞ্জাব (Punjab) জুড়ে যে রাজনৈতিক ঝড় তৈরি হয়েছে, তার মধ্যেই বড় চমক দিলেন পাঞ্জাব বিজেপির সভাপতি সুনীল জাখর। তিনি প্রকাশ্যে কেন্দ্রের অবস্থানের বিরোধিতা করে জানিয়ে দিলেন “চণ্ডিগড় পাঞ্জাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ”। তাঁর এই মন্তব্যের ফলে বিজেপির অন্দরেই নতুন করে রাজনৈতিক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এই ধরনের মতামত খুবই বিরল।

Advertisements

এদিকে পাঞ্জাবজুড়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে, চণ্ডীগড়কে রাষ্ট্রপতির সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, এবং শীতকালীন অধিবেশনে এ নিয়ে কোনও বিলও আনা হবে না। এতে রাজনৈতিক চাপানউতোর সাময়িকভাবে কমলেও বিতর্ক পুরোপুরি থেমে যায়নি।

   

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “চণ্ডিগড় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে সহজতর করার একটি প্রস্তাব সরকারের বিবেচনায় আছে। তবে এই প্রস্তাবে চণ্ডিগড়ের প্রশাসনিক কাঠামো, কিংবা তার পাঞ্জাব-হরিয়ানার ঐতিহাসিক সম্পর্ক পরিবর্তনের কোনও বিষয় নেই। চণ্ডিগড়ের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এবং সব পক্ষের মতামত নিয়ে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এই পরিস্থিতিতে সুনীল জাখরের মন্তব্য যে রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ, তা স্পষ্ট। তিনি বলেন, চণ্ডিগড় কোনও সাধারণ কেন্দ্রশাসিত এলাকা নয়; এটি পাঞ্জাবের সংস্কৃতি, পরিচয় এবং ঐতিহাসিক আবেগের প্রধান প্রতীক। তাই চণ্ডীগড় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে পাঞ্জাবের ইচ্ছা বা স্বার্থ উপেক্ষিত হতে পারে না।

Advertisements

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পাঞ্জাবে বর্তমানে বিজেপি সংগঠনকে শক্তিশালী করার যে চেষ্টা চলছে, তার মধ্যে এই ধরনের মন্তব্য দলীয় রাজনীতিতে বিভাজন তৈরি করতে পারে। একই সঙ্গে পাঞ্জাবের আঞ্চলিক পরিচয়, ভাষা ও ঐতিহ্যের ওপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

অন্যদিকে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি এবং শিরোমণি আকালি দল এই ইস্যুতে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ শুরু করেছে। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্র চণ্ডীগড়ের প্রশাসনকে পুরোপুরি নিজের নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে পাঞ্জাবের ঐতিহাসিক অধিকার খর্ব করতে চাইছে। যদিও কেন্দ্রীয় পরিষ্কারীকরণের পর প্রশাসনিক জটিলতা কিছুটা কমেছে, তবুও বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই ব্যস্ত।

চণ্ডীগড়কে কেন্দ্র করে এই নতুন রাজনৈতিক সংঘাত আগামী দিনে আরও বড় আকার নিতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। সুনীল জাখরের মন্তব্যে স্পষ্ট যে পাঞ্জাব বিজেপির মধ্যে মতভেদ বাড়ছে, এবং চণ্ডীগড়ের ইস্যুটি আগামী নির্বাচনে বড় রাজনৈতিক বারুদের ভূমিকা নিতে পারে।