বিক্ষোভের জবাবে বিক্ষোভ, ভাষা আন্দোলনে উত্তাল মহারাষ্ট্র

মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) থানে জেলার মিরা ভাইন্দর এলাকায় মারাঠি ভাষায় কথা না বলার জন্য এক খাবারের দোকানের মালিকের উপর হামলা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা যে…

Maharashtra marathi laguage protest

মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) থানে জেলার মিরা ভাইন্দর এলাকায় মারাঠি ভাষায় কথা না বলার জন্য এক খাবারের দোকানের মালিকের উপর হামলা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা যে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন, তার পাল্টা হিসেবে রাজ ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) আজ একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।

Advertisements

তবে, এই মিছিলের (Maharashtra) জন্য পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এমএনএস-এর থানে ও পালঘর ইউনিটের প্রধান অবিনাশ যাদবকে ভোর সাড়ে তিনটায় থানের বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

   

গত ১ জুলাই, মিরা ভাইন্দরের ভাইন্দর এলাকায় ৪৮ বছর বয়সী বাবুলাল খিমজি চৌধুরী নামে এক খাবারের দোকানের মালিককে এমএনএস-এর কয়েকজন কর্মী মারাঠি (Maharashtra) ভাষায় কথা না বলার জন্য চড় মারেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়, এমএনএস-এর প্রতীকযুক্ত স্কার্ফ পরা কয়েকজন ব্যক্তি দোকান মালিকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে তাকে হামলা করছেন।

দোকান মালিক যখন বলেন, মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) সব ভাষা বলা হয়, তখন হামলাকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে চড় মারেন এবং দোকান ধ্বংস করার হুমকি দেন। এই ঘটনায় সাতজন এমএনএস কর্মীকে আটক করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) অধীনে দাঙ্গা, হুমকি এবং হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। তবে, তাদের পুলিশ নোটিশ প্রদানের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার প্রতিবাদে ভাইন্দরের (Maharashtra) ব্যবসায়ীরা, বিশেষ করে গুজরাটি ও মারওয়াড়ি সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা, গত ৩ জুলাই একদিনের জন্য দোকান বন্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তারা অভিযোগ করেন, যদিও তাদের বাড়ি মহারাষ্ট্রের বাইরে, তারা দশকের পর দশক ধরে এখানে ব্যবসা করে আসছেন এবং মারাঠি ভাষার প্রতি তাদের কোনও অসম্মান নেই।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য করণ রাজপুত বলেন, “আমরা নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার চাই। আমাদের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ভয়মুক্ত পরিবেশ প্রয়োজন।” এই বিক্ষোভের পর পুলিশ ডিসিপি প্রকাশ গায়কোয়াড় আশ্বাস দেন যে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএনএস এই বিক্ষোভের জবাবে মঙ্গলবার (Maharashtra) মহারাষ্ট্র একীকরণ সমিতির ব্যানারে একটি পাল্টা মিছিলের পরিকল্পনা করে। তবে, পুলিশ এই মিছিলের অনুমতি দেয়নি, কারণ এটি আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমএনএস নেতা সন্দীপ দেশপাণ্ডে অভিযোগ করেন, “গুজরাটি ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু মারাঠি মানুষের মিছিলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এটা কি গুজরাটের সরকার?” তিনি আরও বলেন, “মহারাষ্ট্রে যারা থাকেন, তাদের মারাঠি শিখতেই হবে।”

মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস এই ঘটনায় বলেন, “মিছিলের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এমএনএস নির্দিষ্ট রুটে জেদ করেছিল, যা পুলিশের পরামর্শের বিরুদ্ধে ছিল।” তিনি আরও জানান, মারাঠি ভাষার গর্ব থাকা ঠিক, তবে ভাষার নামে উচ্ছৃঙ্খলতা সহ্য করা হবে না। ফড়ণবিস বলেন, “মারাঠি মানুষের মন বড়। তারা ছোট মনে ভাবেন না।”

‘সংসার বড় হলে সমস্যা বাড়ে’, শমীকের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে দিলীপের বিস্ফোরক মন্তব‌্য

এই ঘটনা মহারাষ্ট্রে (Maharashtra) ভাষাগত বিতর্ককে নতুন করে উসকে দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এমএনএস-এর এই হামলার নিন্দা করেছেন, আবার কেউ কেউ মারাঠি ভাষার প্রচারের পক্ষে কথা বলেছেন। তবে, বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ভাষার প্রশ্নে সম্মান ও সমতা বজায় রাখা জরুরি। এই বিতর্ক মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।