দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে নৌসেনার প্রোজেক্ট P75(I), দীর্ঘ সময় জলের নীচে থাকবে সাবমারিন

Indian Navy: ভারতীয় নৌসেনার P75(I) সাবমেরিন প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এই প্রকল্পের অধীনে ভারত ৬টি উন্নত সাবমেরিন তৈরি করবে, যেগুলো এয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন (AIP) সিস্টেমে সজ্জিত…

INS Vagsheer

Indian Navy: ভারতীয় নৌসেনার P75(I) সাবমেরিন প্রকল্প দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এই প্রকল্পের অধীনে ভারত ৬টি উন্নত সাবমেরিন তৈরি করবে, যেগুলো এয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন (AIP) সিস্টেমে সজ্জিত হবে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে সাবমেরিন দীর্ঘ সময় জলের নীচে থাকতে পারে। যার কারণে তাদের লুকিয়ে কাজ করার ক্ষমতা আরও ভাল হবে।

প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল (DAC) এই ₹70,000 কোটি টাকার প্রকল্পের জন্য Mazagon Dock Shipbuilders Limited (MDL) এবং জার্মানির ThyssenKrupp Marine Systems (TKMS) এর যৌথ বিড অনুমোদন করেছে। প্রযুক্তিগত মানদণ্ড, বিশেষ করে এআইপি সিস্টেমের অভাবের কারণে লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলএন্ডটি) এবং স্পেনের নাভান্তিয়ার দর প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।

   

একটি কারিগরি কমিটির বিস্তারিত তদন্তের পর, MDL-TKMS-এর বিড আরও প্রক্রিয়াকরণের জন্য খোলা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এই প্রকল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যা শুরু থেকেই বিলম্ব ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছিল।

সাবমেরিন আরও উন্নত হবে চুক্তিটি শীঘ্রই চূড়ান্ত হলে, প্রথম সাবমেরিনটি সাত বছরের মধ্যে প্রস্তুত এবং 2032 সালের মধ্যে মোতায়েন করা যেতে পারে। এই টাইমলাইনে, সাবমেরিনগুলি ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করা হবে এবং এই 6টি সাবমেরিনকে আরও উন্নত করা হবে।

P75(I) প্রকল্প ভারতের নৌ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে চিনের সামুদ্রিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে তার সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে। বিতর্কিত সামুদ্রিক এলাকায় অপারেশনের জন্য AIP প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Indian Navy: সাবমেরিনে AIP প্রযুক্তি কী?

AIP এর পুরো নাম Air Independent Propulsion। এটি একটি আধুনিক প্রযুক্তি, যা সাবমেরিনকে দীর্ঘ সময় ধরে জলের নীচে থাকার ক্ষমতা দেয়। ঐতিহ্যবাহী ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনকে তাদের ব্যাটারি রিচার্জ করার জন্য সময়ে সময়ে পৃষ্ঠ হতে হয়। যখন তাদের বাতাসের প্রয়োজন হয়, তখন AIP প্রযুক্তিতে সজ্জিত সাবমেরিনগুলি ভূপৃষ্ঠে না এসে দীর্ঘ সময়ের জন্য জলের নীচে কাজ করতে পারে।

AIP প্রযুক্তির প্রধান সুবিধা

1. দীর্ঘ নিমজ্জন সময়: AIP প্রযুক্তি সাবমেরিনগুলিকে সপ্তাহের জন্য জলের নীচে থাকতে সক্ষম করে, যেখানে প্রচলিত সাবমেরিনগুলি শুধুমাত্র কয়েক দিন থাকতে পারে।

2. ভাল স্টিলথ: যেহেতু AIP সাবমেরিনগুলির পৃষ্ঠের প্রয়োজন হয় না, তাই তারা শত্রুর নজরদারি থেকে নিরাপদ থাকে। এটি যুদ্ধের সময় গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা দেয়।

3. কম জ্বালানী খরচ: AIP প্রযুক্তি শক্তি উৎপাদনের জন্য কম জ্বালানী ব্যবহার করে, যার ফলে অপারেটিং খরচ কম হয়।

4. শব্দহীন অপারেশন: AIP সিস্টেম প্রচলিত ডিজেল ইঞ্জিনের তুলনায় কম শব্দ করে, শত্রু সোনার সিস্টেমকে এড়াতে সাহায্য করে।

5. কৌশলগত সক্ষমতা: AIP প্রযুক্তি ভারতের মতো নৌবাহিনীকে সামুদ্রিক যুদ্ধে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত প্রান্ত প্রদান করে।

এআইপি প্রযুক্তি নৌবাহিনীর কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। এই প্রযুক্তি ভারতের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে।

এই প্রকল্পটি ভারতের নৌবাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং প্রতিরক্ষা উৎপাদনে স্বনির্ভরতার দিকে একটি বিশাল লাফ। এমডিএল এই চুক্তি এবং সাবমেরিনে প্রয়োজনীয় উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যার কারণে এই প্রকল্পটি আগামী কয়েক দশকে ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ও সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে।