নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: কয়েক মাস আগে বাংলার মাটিতে নিজেদের শক্তি প্রমাণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নিজেদের ঘর গোছানোর পর তৃণমূল এবার গোটা দেশের রাজনীতিতে ছাপ ফেলার প্রস্তুতি শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা ও গোয়ায় তৃণমূল দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেছে।
এরই মধ্যে আগামী সপ্তাহে দিল্লি যাচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা (Mamata Banerjee) বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতার এই দিল্লি সফরে থাকছে বড় মাপের এক চমক। দিল্লিতে (Delhi) মমতার উপস্থিতিতে তাঁর দলে যোগ দিতে পারেন বিজেপি সাংসদ তথা গান্ধী পরিবারের তরুণ নেতা বরুণ গান্ধী (Varun Gandhi)।
সম্প্রতি পিলভিটের সাংসদ বরুণ এবং তাঁর মা সুলতানপুরের সাংসদ মানেকার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। যে কারণে সম্প্রতি বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে বরুণ ও মানেকাকে (maneka) সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি কৃষি আইনকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বরুণ। লখিমপুর খেরির ঘটনাতেও তিনি দলের লাইনের বিরুদ্ধে গিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন এক রাজনৈতিক প্লাটফর্ম খুঁজছেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা (Indira) গান্ধীর ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধীর (sanjay gandhi) একমাত্র ছেলে বরুণ। তবে তাঁর পক্ষে কংগ্রেস শিবিরে যোগ দেওয়া কার্যত অসম্ভব। কাজেই প্রশ্ন উঠছে বরুণের সামনে বিকল্প কোন দল রয়েছে। এই প্রশ্নের উত্তরেই উঠে এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের নাম।
এই মুহূর্তে বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের সবচেয়ে বড় মুখ হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন ইস্যুতে মোদি ও বিজেপিকে নিয়মিত আক্রমণ করে থাকেন মমতা। কয়েক মাস আগে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মোদি, অমিত শাহকে গোহারা হারিরেছেন তৃণমূল নেত্রী। মোদি, শাহ-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতারা দিল্লি- কলকাতা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করলেও তৃণমূলের গড়ে দাঁত ফোটাতে পারেননি।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একাধিক রাজনৈতিক দল ও নেতা ইতিমধ্যেই মমতার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখেছেন। বিরোধী নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই মমতাকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সে কারণেই বিজেপি বিরোধী এই মঞ্চে বা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন বরুণ।
যদিও এ বিষয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। বরুণও তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও শব্দ খরচ করেননি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তৃণমূল নেতৃত্ব শুধু মুচকি হেসেছেন। তাঁদের এই হাসির ইঙ্গিত কী সেটা অবশ্য ধরতে পারেনি রাজনৈতিক মহল। তবে বরুণের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার খবরটি প্রকাশ্যে আসতেই জাতীয় রাজনীতিতে একটা ঢেউ উঠেছে। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, পদ্ম ছেড়ে আরও এক নেতা কি এবার ঘাসফুল শিবিরে ভিড়ছেন। শেষ পর্যন্ত বরুণ যদি তৃণমূলে যোগ দেন তবে সেটা ভারতীয় রাজনীতিতে এক বড় চমক হতে চলেছে।