Controversial Remarks on President: বিজেপি সংসদ সদস্যরা সম্প্রতি কংগ্রেস নেত্রী এবং রাজ্যসভার সদস্য সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) বিরুদ্ধে ‘ভারতের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অসম্মানজনক ও অবমাননাকর শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে সংসদীয় বিশেষাধিকার, নৈতিকতা এবং গ্রহণযোগ্যতার লঙ্ঘন’ করার জন্য একটি বিশেষাধিকার হরণ নোটিশ জারি করেছেন। এর পাশাপাশি, বিজেপি সংসদ সদস্যরা নির্দল সংসদ সদস্য পপ্পু যাদবের বিরুদ্ধেও বিশেষাধিকার হরণ নোটিশ দিয়েছেন।
বিজেপির দাবি: শাস্তিমূলক পদক্ষেপের প্রয়োজন
বিজেপি সংসদ সদস্যরা একটি নোটিসে লিখেছেন, “আমরা সোনিয়া গান্ধীর সাম্প্রতিক কিছু অসংবিধানিক, অসম্মানজনক মন্তব্য সম্পর্কে গভীরভাবে হতাশ। সোনিয়া গান্ধীর রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মন্তব্যের জন্য গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
বিজেপি সংসদ সদস্যদের অভিযোগ, সোনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে যেভাবে মন্তব্য করেছেন, তা ভারতের সাংবিধানিক ঐতিহ্যের প্রতি অবমাননা। তারা বলেন, “রাষ্ট্রপতি ভারতের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য অগ্রহণযোগ্য।”
লোকসভা সভাপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানকে জমা দেওয়া স্মারকলিপি
এদিকে, রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সোনিয়া গান্ধী এবং পপ্পু যাদবের বিরুদ্ধে সংসদীয় বিশেষাধিকার হরণ নোটিশ দেওয়া বিজেপি সংসদ সদস্যরা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর দাবি, “এই দেশটির আঞ্চলিক, আদিবাসী সংসদ সদস্যরা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করেছেন। তারা আজ লোকসভা সভাপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে তাদের স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।”
কিরন রিজিজুর প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু বলেন, “লোকসভায় পপ্পু যাদব রাষ্ট্রপতির ভাষণকে ‘প্রেমপত্র’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এই বিষয়ে আমাদের আঞ্চলিক সাংসদরা গুরুতর আপত্তি জানিয়েছেন এবং প্রেসিডেন্টের ভাষণের প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্যের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে দাবি করেছেন। এছাড়া, রাজ্যসভায় সোনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতির জন্য ‘বেচারা মহিলা’ ও ‘থকা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এই বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন।”
সোনিয়া গান্ধী ও পপ্পু যাদবের বিতর্কিত মন্তব্য
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর সোনিয়া গান্ধী কিছু মন্তব্য করেন। সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, “তিনি ভাষণের শেষ পর্যন্ত খুবই ক্লান্ত ছিলেন এবং বেশ কষ্টে কথা বলছিলেন, ‘বেচারা’”।
অপরদিকে, নির্দল সংসদ সদস্য পপ্পু যাদব রাষ্ট্রপতির ভাষণকে ‘প্রেমপত্র’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তার বক্তব্য ছিল, “রাষ্ট্রপতি শুধুমাত্র একটি সীলমোহর, তাকে শুধু প্রেমপত্র পড়তে বলা হয়।” বিজেপি এই দুই নেতার মন্তব্যকে একদম অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে এবং দাবি করছে যে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিজেপির প্রতিক্রিয়া ও শাস্তির দাবি
বিজেপি দলের সদস্যরা সোনিয়া গান্ধী এবং পপ্পু যাদবের মন্তব্যের বিরুদ্ধে নিজেদের বিরোধিতা স্পষ্ট করেছে। তারা বলছে, এই ধরনের মন্তব্য সংসদীয় রীতিনীতি, সৌজন্য ও শিষ্টাচারের পরিপন্থী। পাশাপাশি, বিজেপি আরও দাবি করছে যে, বিশেষাধিকার হরণ নোটিশের মাধ্যমে এসব মন্তব্যের জন্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
বিজেপি নেতারা বলেন, “সোনিয়া গান্ধী এবং পপ্পু যাদবের এসব মন্তব্য দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ এবং দেশের গণতন্ত্রের প্রতি অবমাননা। এসব মন্তব্যের জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এই বিতর্কিত মন্তব্যের পরে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধীর মন্তব্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের মতে, সোনিয়া গান্ধী রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে সরাসরি মন্তব্য করার অধিকার রাখেন, কারণ এটি এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মতামত হতে পারে।
এদিকে, সোনিয়া গান্ধীর পক্ষ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে কংগ্রেসের নেতারা দাবি করেছেন যে, সোনিয়া গান্ধী এমন কোনও মন্তব্য করেননি যা রাষ্ট্রপতির প্রতি অসম্মানজনক হতে পারে।
নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
এই বিষয়টি আরও গুরুতর হয়েছে যখন বিজেপি তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যে, অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা সামনে আসার পরেও কংগ্রেস ও অন্যান্য বিরোধী দল তাদের সমর্থন প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এই ঘটনা দেশের রাজনীতি ও সংসদীয় আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সোনিয়া গান্ধী এবং পপ্পু যাদবের মন্তব্য, এবং বিজেপির প্রতিক্রিয়া, প্রমাণ করেছে যে, ভারতের রাজনীতি এখন এক চরম উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, সরকারের তরফ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা জানার জন্য সমস্ত পক্ষই নজর রাখছে।