জোট ধর্ম মেনে চলবেন, ‘ইন্দিরা’ নিয়ে কি বার্তা দিলেন মোদী?

নেহেরুর পর এবার ইন্দিরাকে টেনে কংগ্রেসকে খোঁচা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  সোমবার থেকে শুরু হল সংসদ অধিবেশন। তার আগেই এদিন সহমত বজায় রেখে সরকার চালানোর বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদের বাইরে দাড়িয়ে এদিন তিনি বলেন, ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র। সংবিধানের দেওয়া নির্বাচনী ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত হয়। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ তৃতীয়বারের জন্য সরকারকে নির্বাচিত করায়।” প্রথম সংসদ অধিবেশনের দিন সকালেই রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে শপথ নিয়েছেন প্রোটেম স্পিকার ভর্তৃহরি মহতাব। তারপরেই সংসদে গিয়ে নিজের কার্যভার গ্রহণ করেন তিনি। তারপর সংসদে গিয়ে সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisements

যদিও নরেন্দ্র মোদী সংবিধানের ঐতিহ্য মেনে সৌহার্যের বার্তা দিলেও ‘জরুরি অবস্থা’র পঞ্চাশ বছর পূর্তি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি কংগ্রেসকে। এবারের নির্বাচন, ১৯৭৫ সালের ইন্দিরা গান্ধীর জরুরী অবস্থার বিরুদ্ধে সংসদীয় গনতন্ত্রের জয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গত দুবার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তাঁরা। ফলে নিতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে জোটসরকার গড়তে হয়েছে মোদীকে। এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী ক্ষমতায় এলেই সংবিধান বদলে দেওার আভাস পাওয়া গিয়েছিল। আর ভোটের আগে সংবিধানকে হাতিয়ার করেই দেশে ভোটের ‘ন্যারেটিভ’ নিজেদের দিকে ছিনিয়ে আনতে অনেকটাই সক্ষম হয় ইন্ডিয়া জোট। যারফলে আগের বারের তুলনায় ভোটের হার অনেকটাই কমেছে গেরুয়া শিবিরের। এবার সেই সংবিধানকেই নিজেদের রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে চলেছে মোদী? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

সরকার গড়লেও মন্ত্রীসভা বন্টন ও স্পিকার পদ নিয়ে শরিকি দল গুলির সঙ্গে এখনও বিরোধ মেটেনি বিজেপির। এর মধ্যে প্রোটেম স্পিকার পদে বিজেপি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ায় আরও বেড়েছে জলঘোলা। নিয়ম অনুযায়ী প্রোটেম স্পিকার পদটি বিরোধীদের পাওয়ার কথা। তাই মুখে সংবিধানের গুনকীর্তন গাইলেও বাস্তব তাঁর মনোভাবে সেই প্রতিফলন ঘটে নি বলেই দাবি বিরোধীদের। আগামীকাল ২৫ জুন সংসদের স্পিকার নির্বাচন করা হবে। তা নিয়ে ইতিমধ্যে ঘরের মধ্যেই চাপে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

Advertisements

এবার এই ইস্যুতে সংসদে বিরোধীদের আক্রমণ কিভাবে সামলায় নয়া সরকার সেটাই দেখার। গত দু’বার এর তুলনায় এবার সংসদের চেহারা অনেকটাই অন্যরকম। ধারে ও ভারে এখন অনেকটাই শক্তিশালী বিরোধী শিবির। তাই কথায় কথায় বিরোধীদের বরখাস্ত করে বিরোধী শূন্য সংসদে বিল পাস সম্ভব নয়। পাশাপাশি নিট ও নেট দুর্নীতি নিয়ে একদিকে কোনঠাসা কেন্দ্র। অধিবেশনে সেই ইস্যুতে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে তাঁর সরকারকে। কিন্তু তার আগেই ইন্দিরার ‘জরুরী অবস্থা’র প্রসঙ্গ টেনে এনে কংগ্রেসই যে তাঁর টার্গেট, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন মোদী।