রাষ্ট্রপতি শাসন চালু হয়েছে আগেই, তারপর থেকেই আরো কড়াকড়ি মণিপুরের প্রশাসন। এবার শুরু হয়েছে বেআইনি অস্ত্র আত্মসমর্পণ প্রোগ্রাম। মণিপুরের গভর্নর অজয় কুমার ভল্লার আবেদন এবং জেলা পুলিশ, অসম রাইফেলস ও সিআরপিএফ-এর যৌথ প্রচেষ্টায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে অবৈধ অস্ত্র সমর্পণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার, চূড়াচাঁদপুর, ইম্ফল পূর্ব, বিষ্ণুপুর, থৌবাল, কাংপোকপি, জিরিবাম এবং ইম্ফল পশ্চিম জেলার বিভিন্ন স্থানে মোট ৮৭টি অস্ত্র সমর্পণ করা হয়েছে।
এছাড়াও, নিরাপত্তা বাহিনী পাহাড় এবং উপত্যকার স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে। তেংনৌপাল জেলার এমআরএইচ থানার অন্তর্গত এইচ. মোনজাং গ্রামে চালানো এক অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অভিযানে ১০ ফুট লম্বা একটি পম্পি (সম্ভবত ৮৪ মিমি), আরও একটি পম্পি (সম্ভবত ৫১ মিমি ইমপ্রোভাইজড মর্টার), তিনটি পম্পি বোমা (স্থানেই ধ্বংস করা হয়েছে) এবং তিনটি আইইডি (প্রায় ৫.৫ কেজি) সহ ডেটোনেটর উদ্ধার করা হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
এর আগে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্স (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই সোমবার ও মঙ্গলবার মণিপুর পরিদর্শনে আসেন। তার এই সফরের মূল লক্ষ্য ছিল ইন্দো-মিয়ানমার সীমান্ত (আইএমবি)-এর বর্তমান পরিস্থিতি এবং সীমান্ত অবকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত অগ্রগতি বোঝা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পরিদর্শনের সময় লেফটেন্যান্ট জেনারেল ঘাই গভর্নর ভল্লা, রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মুখ্যসচিব ও মণিপুরের ডিজিপির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ডিজিএমও মণিপুরের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করেন এবং ইন্দো-মিয়ানমার সীমান্ত ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি নিরাপত্তা পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং রাজ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য ‘সরকারের সম্মিলিত দৃষ্টিভঙ্গি’ প্রয়োগের ওপর জোর দেন।
তার এই সফর সেনাবাহিনী ও রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি এবং মণিপুরের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে কৌশলগত পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।