‘ধরা পড়েছেন’ বলেছিল পাকিস্তান, আজ রাষ্ট্রপতির পাশে সেই রাফাল পাইলট শিবাঙ্গী সিং

President Murmu Rafale Flight

ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বুধবার রচনা করলেন ইতিহাসের নতুন অধ্যায়। হরিয়ানার অম্বালা বিমানঘাঁটি থেকে তিনি উড়ে গেলেন রাফাল যুদ্ধবিমানে, ৩০ মিনিটের এক ঐতিহাসিক উড়ান, যা কেবল রাষ্ট্রপতির ক্যালেন্ডারেই নয়, ভারতীয় বায়ুসেনার গর্বের পাতাতেও অমর হয়ে রইল।

Advertisements

রাষ্ট্রপতির পাশে স্কোয়াড্রন লিডার শিবাঙ্গী সিং

সেই উড়ানের শেষে রাষ্ট্রপতির পাশে ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার শিবাঙ্গী সিং- সেই সাহসী বায়ুসেনা অফিসার, যাকে ঘিরে সম্প্রতি পাকিস্তানের ভুয়ো প্রচারের ঝড় উঠেছিল ‘অপারেশন সিন্ধুর’-এর সময়। মুহূর্তটি যেন এক প্রতীকী উত্তর, রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে ভারতের আকাশসেনা আজ আরও দৃঢ়, আরও অকপট।

   

‘গোল্ডেন অ্যারোজ স্কোয়াড্রন’-এর সদস্য শিবাঙ্গী সিং ছিলেন মে মাসের অপারেশন সিন্ধুর অভিযানের অন্যতম মুখ। পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গিঘাঁটিতে ভারতীয় বায়ুসেনার নির্ভুল আঘাতে কেঁপে উঠেছিল সীমান্তপারের সন্ত্রাস অবকাঠামো। সেই অভিযানের পরই ইসলামাবাদ দাবি করেছিল, নাকি একটি রাফাল ভূপাতিত হয়েছে, আর সেই বিমানের পাইলট ‘বন্দি’ হয়েছেন শিবাঙ্গী সিং!

ডিপফেক ভিডিও President Murmu Rafale Flight

পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করতে ছড়ানো হয় এক ডিপফেক ভিডিও— যেখানে দেখা যায়, নাকি বায়ুসেনা প্রধান এপি সিং ঘোষণা করছেন শিবাঙ্গী নিখোঁজ। ভারত সরকার সঙ্গে সঙ্গে ভুয়ো ভিডিওটি খণ্ডন করে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) ফ্যাক্ট চেক জানায়, ভিডিওটি “সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া।”

বারাণসীর মেয়ে, মাত্র ২৯ বছর বয়সেই শিবাঙ্গী সিং আজ ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম গর্ব। ২০১৭ সালে যোগ দিয়েছিলেন মহিলা ফাইটার পাইলটদের দ্বিতীয় ব্যাচে। রাফাল উড়ানের যোগ্যতা অর্জনের আগে চালিয়েছেন মিগ-২১ বাইসন— বিশ্বের প্রাচীনতম যুদ্ধবিমানের একটি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন রাফালের ককপিটে, যা ভারতের বায়ু শক্তির রূপান্তরের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

Advertisements

ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস স্কুলে সম্মানিত

সম্প্রতি তামিলনাড়ুর তাম্বারম ঘাঁটিতে ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস স্কুলে তাঁকে সম্মানিত করেন এয়ার মার্শাল তেজবীর সিং। অর্জন করেন ‘কোয়ালিফায়েড ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর (QFI)’ পদক— ২০২৫ সালের ৯ অক্টোবরের সেই সাফল্য তাঁর কর্মজীবনের আরেক গর্বের অধ্যায়।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি মুর্মুর এই উড়ান নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। রাফালে উড়ে তিনি হলেন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি, যিনি বায়ুসেনার দুটি শীর্ষ যুদ্ধবিমানে উড়েছেন। এর আগে ২০২৩ সালের এপ্রিলে তিনি অসমের তেজপুর বিমানঘাঁটি থেকে এক sortie দেন সুখোই-৩০ এমকেআই-তে।

অম্বালা বিমানঘাঁটির ভিজিটরস বুক-এ রাষ্ট্রপতি লিখেছেন, “রাফালে এই প্রথম উড়ান আমার মনে নতুন করে জাগিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতার প্রতি গর্ব ও আস্থা। ভারতীয় বায়ুসেনা এবং অম্বালা ঘাঁটির সমগ্র টিমকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই এই সফল আয়োজনের জন্য।”

রাষ্ট্রপতির সেই স্বাক্ষরিত মুহূর্ত যেন বার্তা দিল,  ভারতের আকাশ আজ নিরাপদ হাতে।