পিকে-র গ্রেফতারে উত্তাল পাটনা, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি

বিহারের পাটনার (BPSC Aspirant Protest) গান্ধী ময়দানে গত কয়েকদিন ধরে যে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা একাধিক কারণে জনচর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিহারের পাবলিক সার্ভিস…

Prashant Kishor Detained by Bihar Police from Patna During Protest

বিহারের পাটনার (BPSC Aspirant Protest) গান্ধী ময়দানে গত কয়েকদিন ধরে যে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা একাধিক কারণে জনচর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিহারের পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (বিপিএসসি) ৭০তম পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগে দীর্ঘ সময় ধরে সরব ছিলেন জন সুরাজ দলের নেতা প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। পিকে ২ জানুয়ারি থেকে ওই পরীক্ষার অনিয়ম নিয়ে বিহারের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গান্ধী ময়দানে (BPSC Aspirant Protest) ‘আমরণ’ অনশনে বসেন। তাঁর দাবি ছিল, বিহারের চাকরির পরীক্ষাগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে কারচুপি চলছে এবং তার প্রতিবাদে পাটনার গান্ধী(BPSC Aspirant Protest)  ময়দানে জনসাধারণকে একত্রিত করে তিনি এই আন্দোলন শুরু করেন।

এদিকে, পিকে-র এই অনশনকে কেন্দ্র করে একাধিক রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পটনার পুলিশ ৫ জানুয়ারি, সোমবার ভোরে পিকে-কে গ্রেফতার করে এবং তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় পটনার এমস হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, পিকে এবং তাঁর সমর্থকরা গান্ধী ময়দানে (BPSC Aspirant Protest) অনশনে বসার সময় আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় তাঁদের আটক করা হয়। পুলিশের দাবি, তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।

   

তবে পিকে-র সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা দাবি করছেন, পুলিশ তাঁদের নেতা কোথায় নিয়ে গেছে, সে বিষয়ে কোনও তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি, পিকে-কে গ্রেফতারের সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁর এবং সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছে, এমন অভিযোগও উঠেছে। কিছু গণমাধ্যমের দাবি, অ্যাম্বুল্যান্সে তোলার সময় পিকে-কে পুলিশ চড় মেরেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।

এদিকে, পিকে-এর অনশনের (BPSC Aspirant Protest) বিষয়টি শুধুমাত্র তাঁর দলের সমর্থকরা নয়, বিহারের বহু শিক্ষাবিদ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলও সমর্থন জানিয়েছে। বিহারে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন গত কিছুদিন ধরে তীব্র আকার ধারণ করেছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার পুনরায় আয়োজনের দাবিতে সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ এবং দখল আন্দোলন করছেন। পিকে-র এই অনশনও তাঁদের আন্দোলনের পক্ষে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

একই সময়ে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও সমালোচনার মুখে পড়েছেন। পিকে-র অভিযোগ, বিহারের চাকরির পরীক্ষাগুলিতে অনিয়ম দীর্ঘদিন ধরে চলছে, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কখনও তাদের দাবিতে আগ্রহী হননি। পিকে-র ভাষ্যে, ‘‘নীতীশ কুমার ব্যক্তিগত কাজে দিল্লি যেতে পারেন, কিন্তু একবারও রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের সমস্যার সমাধানে তিনি এখানে আসেননি।’’

গত ২৯ ডিসেম্বর, পটনার গান্ধী ময়দানে চাকরিপ্রার্থীদের জমায়েতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পিকে ওই জমায়েতে উপস্থিত ছিলেন এবং পুলিশ তাঁকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে মামলা করে। এর পর ২ জানুয়ারি থেকে তিনি ‘আমরণ’ অনশনে বসেন এবং এরই মধ্যে এই আন্দোলন রাজ্যজুড়ে সাড়া ফেলে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, পিকে-র আন্দোলন বিহারের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে? রাজ্যের চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, বিহারে চাকরির পরীক্ষা আবার করা হোক, যেন তাদের পক্ষে সুষ্ঠু ও ন্যায্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়।