বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে একটি নতুন ঝড় তুলে দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)। জন সুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক রাজনৈতিক কৌশলগত বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর রাহুল গান্ধীকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন, “বিহারের কোনও গ্রামে এসে এক রাত কাটিয়ে যান রাহুল গান্ধী।” এই বক্তব্য তাঁর একটি সাম্প্রতিক পডকাস্টে উচ্চারিত হয়েছে, যা এখন বিহারের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
প্রশান্ত কিশোরের এই চ্যালেঞ্জের পটভূমি হল বিহারের আসন্ন বিধানসভা ভোট। কয়েক মাসের মধ্যেই বিহারের মানুষ তাঁদের ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে, এবং এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। প্রশান্ত কিশোরের এই চ্যালেঞ্জ রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেস পার্টির উপর একটি সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যেখানে তিনি রাহুল গান্ধীকে বিহারের সাধারণ মানুষের সংগে সংযোগ স্থাপনের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
পডকাস্টে প্রশান্ত কিশোর রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করেছেন বলে জানা গিয়েছে, “আপনি দিল্লিতে বসে বিহারীদের উপহাস করেন, তারপর এখানে এসে আমাদেরকে উপদেশ দিতে আসেন।” এই বক্তব্যে তিনি রাহুল গান্ধীর উপর বিহারের মানুষের প্রতি অবজ্ঞার অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপরও তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর, যেখানে তিনি বলেছেন, “একটা ধারণা রয়েছে যে সব বিহারীদের কেবল ৪ কেজি অন্নের প্রয়োজন।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বিহারের মানুষের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলার দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোর নিতিশ কুমারকে সমালোচনার টার্গেট করেছেন। তিনি বলেছেন, “শিক্ষার অবস্থা লালু যাদবের শাসনামলে যেমন ছিল, এখন তা তার চেয়েও খারাপ।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতির দিকে স্পষ্টভাবে আঙুল তুলেছেন। এছাড়া, তেজস্বী যাদবের উপরও তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর, যেখানে তিনি বলেছেন, “তিনি কেবল লালু যাদবের ছেলে হওয়ার কারণে এই পদ ধরে রয়েছেন।” এই বক্তব্যে তিনি তেজস্বী যাদবের নেতৃত্ব ক্ষমতার উপর প্রশ্ন তোলেন।
প্রশান্ত কিশোরের এই বক্তব্যগুলো বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। তাঁর চ্যালেঞ্জ রাহুল গান্ধীকে বিহারের মানুষের সংগে সংযোগ স্থাপনের জন্য আহ্বান জানানোর পাশাপাশি, বিহারের রাজনৈতিক নেতাদের উপর তীব্র সমালোচনা করে। এই সমালোচনার মাধ্যমে তিনি বিহারের মানুষের মধ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক চেতনা জাগ্রত করতে চেয়েছেন, যেখানে তিনি বিহারের উন্নয়ন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য একটি বিকল্প পথের কথা বলছেন।
প্রশান্ত কিশোরের এই বক্তব্যগুলোর মাধ্যমে তিনি নিজেকে বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে একজন প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তাঁর চ্যালেঞ্জ এবং সমালোচনা বিহারের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি নতুন তীব্রতা সৃষ্টি করেছে, যা আসন্ন বিধানসভা ভোটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।