কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে ভোটার সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ECI) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, উত্তর দিনাজপুরে ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ১০২%, মালদায় ৯৫%, যেখানে সারা দেশের গড় বৃদ্ধি মাত্র ৪৯%। এই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আসার পরই বিজেপি অভিযোগ তুলেছে “বাংলায় সীমান্ত পেরিয়ে ব্যাপক অনুপ্রবেশের ফলেই এই ভোটার বিস্ফোরণ ঘটেছে।”
বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, “এটি স্বাভাবিক ভোটার বৃদ্ধি নয়। গত পাঁচ বছরে ভোটার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ এটা তখনই সম্ভব, যখন বিদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই বৃদ্ধি বিশেষভাবে সীমান্ত জেলাগুলিতেই কেন? এটা স্পষ্টভাবে অনুপ্রবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছে।”
ভারতের আকাশ-এনজি ক্ষেপণাস্ত্রে আগ্রহী ব্রাজিল, সহ-উৎপাদন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে?
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, এটি নিছক রাজনৈতিক নাটক এবং ভোটের আগে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা। তারা আরও বলেন, “বিজেপি প্রতিবারই বাংলার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলে, কিন্তু কখনও কোনও প্রমাণ দেখাতে পারে না। সীমান্ত এলাকায় জনগণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভোটার সংখ্যাও বেড়েছে, এটিই স্বাভাবিক।”
অন্যদিকে, প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদীয়া জেলার ব্লকভিত্তিক ভোটার রেজিস্ট্রেশন ডেটা বিশ্লেষণ শুরু করেছে। কমিশনের এক আধিকারিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, কিছু জায়গায় নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির হার অস্বাভাবিক। আমরা পরিসংখ্যান, ভোটার আইডি নথি এবং বাসস্থান যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছি।”
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বাংলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে ভোটার বৃদ্ধির এই প্রবণতা শুধু সংখ্যাগত নয়, ভবিষ্যৎ নির্বাচনী ভারসাম্যেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং উত্তর ২৪ পরগনা এই জেলাগুলিই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


