“ভোট চোর গদ্দি ছোড়” অভিযানে কর্ণাটক থেকে ১.২১ কোটি স্বাক্ষর রাজধানীতে

vote-chor-gaddi-chor-campaign-karnataka-congress-1-21-crore-signatures

বেঙ্গালুরু: দিল্লির রাজনৈতিক ময়দানে আজ এক নতুন অধ্যায়। এই অধ্যায় যুক্ত হল কর্ণাটক কংগ্রেসের হাতে। “ভোট চোর গদ্দি ছোড়” অভিযানে উপমুখ্যমন্ত্রী ও কেপিসিসি সভাপতি ডি.কে. শিবকুমারের নেতৃত্বে রাজ্যের শীর্ষ নেতারা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে জমা হওয়া স্বাক্ষরসমূহ তুলে দিয়েছেন। এই “ভোট চোর গদ্দি ছোড়” স্বাক্ষর অভিযানে কর্ণাটকের কংগ্রেস কর্মীরা সংগ্রহ করেছে ১ কোটি ২১ লক্ষেরও বেশি স্বাক্ষর।

Advertisements

এই অভিযান শুধু রাজ্যের নয়, সারা দেশের কংগ্রেসের একটা বড় জন-আন্দোলনের অংশ, যা নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ধরে। শিবকুমারের মুখে যেন জনতার গল্প ফুটে উঠছে: “এটা আমাদের গণতন্ত্রের লড়াই, ভোট চুরির বিরুদ্ধে জনগণের অস্ত্র।”

   

শহিদ বেদীতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ শুভেন্দুর

এই অভিযানের শুরু হয়েছিল গত আগস্ট মাসে, যখন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী “ভোট চোর গদ্দি ছোড়” র‍্যালির ডাক দেন। ২২ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যভরত র‍্যালি চলার পর, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়।

দরজা থেকে দরজায়, গ্রাম থেকে শহর, কর্মীরা ছুটে বেড়িয়েছেন। কর্ণাটকের মতো বৈচিত্র্যময় রাজ্যে এটা ছিল চ্যালেঞ্জিং—বিজয়পুরের শুকনো মাটি থেকে মহেশ্বরের সবুজ পাহাড়, সব জায়গায় স্বাক্ষরের ঢেউ উঠেছে। শিমোগা জেলায় তো লক্ষ্য ছিল ১.৫ লক্ষ, আর তিন দিনের মধ্যে কমপ্লিট! বিডারে সার্দার বল্লভভাই প্যাটেল সার্কেলে এমএলএ আল্লামপ্রভু পাটিল উদ্বোধন করেন, কালবুর্গিতে দক্ষিণ কনস্টিটুয়েন্সির কর্মীরা সারি বেঁধে দাঁড়িয়েছিলেন।

Advertisements

শিবকুমার নিজে প্রত্যেক মন্ত্রী ও এমএলএকে লিখিত নির্দেশ দেন প্রত্যেকে কমপক্ষে ২ লক্ষ স্বাক্ষর সংগ্রহ করো। ফল? ১.২১ কোটি স্বাক্ষর, যা রাজ্যের জনগণের মনের কথা বলছে।কিন্তু এই স্বাক্ষরের পিছনে লুকিয়ে আছে গভীর অভিযোগ। কংগ্রেস বলছে, নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোটার তালিকায় ব্যাপক জালিয়াতি চলছে মৃতদের নাম থেকে সঠিক ভোটারের নাম মুছে ফেলা, শেষ মুহূর্তে তালিকা বদলানো। এটা গণতন্ত্রের মূলে প্রহার।

অভিযানে পাঁচটা মূল দাবি উঠেছে: প্রথমত, ভোটার দমনকারী কর্মকর্তা ও এজেন্টদের বিরুদ্ধে মামলা; দ্বিতীয়ত, ছবিসহ মেশিন-রিডেবল ভোটার তালিকা প্রকাশ; তৃতীয়ত, প্রত্যেক নির্বাচনের আগে অ্যাডিশন-ডিলিশন লিস্ট ছবিসহ জারি; চতুর্থত, ভুল ডিলিশনের জন্য গ্রিভ্যান্স রেড্রেসাল সিস্টেম; আর পঞ্চমত, তালিকা পরিবর্তনের স্পষ্ট কাট-অফ তারিখ ঘোষণা। এগুলো শুধু দাবি নয়, জনগণের অধিকার। শিবকুমার বলেছেন, “আমরা দেখেছি, কীভাবে লক্ষ লক্ষ ভোটারের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।

এই স্বাক্ষর রাষ্ট্রপতিকে পৌঁছে দিয়ে আমরা বলছি এটা থামাতে হবে।” এই অভিযান সারা দেশে ৫ কোটিরও বেশি স্বাক্ষর জমেছে, যা ৮ নভেম্বর রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে। কর্ণাটকের অবদান এতে সবচেয়ে বড়। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা কংগ্রেসের একটা স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি।

বিজেপি সরকারের উপর নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তুলে তারা জনমত গড়ে তুলছে। রাহুল গান্ধী এটাকে “গণতন্ত্রের আত্মার লড়াই” বলেছেন। কর্ণাটকের মতো রাজ্যে, যেখানে ২০২৮-এর অ্যাসেম্বলি নির্বাচন লক্ষ্যে, এই অভিযান কর্মীদের উজ্জীবিত করেছে। শিমোগায় কংগ্রেস কমিটি এটাকে “নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা উন্মোচন” বলে শুরু করে, আর এখন সারা রাজ্যে ঢেউ।