গত বুধবার রেকর্ড ভোটে জিতে দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর ট্রাম্প জয়ী হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সুদের হার কমানোর কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকার ফেডারেল ব্যাঙ্ক। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে (US Federal Reserve) রাখতে ফের সুদের হার কমানোর কথা ঘোষণা করেছে তারা। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ৭ নভেম্বর ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে আমেরিকার প্রধান আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
চলতি বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয় বার সুদের হার হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিল ফেডারেল ব্যাঙ্ক। এই সিদ্ধান্তটি বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারে প্রভাব ফেলেছে, যার মধ্যে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি রয়েছে ভারতও। যদিও সুদের হার কমানোর ফলে ঋণের খরচ কমবে। কিন্তু মার্কিন সরকারের নীতিতে শুল্ক বৃদ্ধি, কর হ্রাস এবং শরণার্থী সংক্রান্ত কঠোর সিদ্ধান্তের বিষয়েও উদ্বেগ রয়েছে। এই সব নীতির ফলে মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি পেতে পারে।
যা পরবর্তীতে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক এবং সরকারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেডের সুদের হার কমানোর কারণে আমেরিকায় ঋণের খরচ কমবে, যেটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। তবে ট্রাম্পের কর কমানোর সিদ্ধান্ত এবং শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। ফলে, মার্কিন সরকারকে আরও ঋণ নিতে হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি ফেড এবং সরকারের মধ্যে আরও বড় সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে। এদিকে ফেডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পর ডিসেম্বর মাসে আবারও সুদের হার কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফেডের চেয়ারম্যান জেরম পাওয়েল এই বিষয়ে বলেছেন, “আমরা আর্থিক তথ্যগুলি ভালভাবে পরীক্ষা করব। ডিসেম্বরে আমাদের পরবর্তী বৈঠকে সুদের হার আরও কমানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ফেডের এই নতুন সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তটি শুধু আমেরিকার অর্থনীতির জন্যই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তবে মার্কিন সরকারের অর্থনৈতিক নীতি এবং ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাবে ভারত।
কম সুদে ঋণ নেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। এর ফলে আমদানি-রফতানি বাজারেও কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তবে এবার বিশ্ব বাজারের অস্থিরতা এবং মার্কিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে ভারতসহ অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলো তাদের নীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এখন সেটাই দেখার।