ব্রিটেনে ‘ঋষি যুগের’ সমাপ্তি, ছিন্ন ভারতীয় নাড়ির যোগ!

লন্ডনঃ ব্রিটেনের মসনদে রদবদল। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আসছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্ট্যামার। কনসারভেটিভদের বিপুল ভোটে হারিয়ে ব্রিটেনের ক্ষমতা দখল করেছে লেবার পার্টি। এবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের…

লন্ডনঃ ব্রিটেনের মসনদে রদবদল। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আসছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্ট্যামার। কনসারভেটিভদের বিপুল ভোটে হারিয়ে ব্রিটেনের ক্ষমতা দখল করেছে লেবার পার্টি। এবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের রাশও যেতে চলেছে লেবার পার্টির হাতেই। কারণ ভোটগণনায় ৬৫০ টি আসনের মধ্যে ৪১০ টি আসনে জিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে কিয়ার স্ট্যামারের দল। ফলে ভোটে হেরে একরকম হতাশ কনসারভেটিভেরা।

ব্রিটেনে মন্ত্রী হচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ, উচ্ছসিত মাসি হাসিনা

   

ভোটগণনা চলাকালীনই ভেঙে পড়েন প্রাক্তণ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। “এই সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেছে লেবার পার্টি। আমি স্যার কিয়ার স্ট্যামারকে অভিনন্দন জানাতে ফোন করেছিলাম। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্থলভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। এই হারের দায় আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি। আই অ্যাম সরি (আমি দুঃখিত)! এদিন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর গলায় হালকা ‘বেদনা’র আভাস ধরা পড়ে।

ভোটে জিতে প্রথম ভাষণেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন নয়া প্রধানমন্ত্রী স্ট্যামার। দীর্ঘ ১৪ বছর কনসারভেটিভদের হাত থেকে দেশের ক্ষমতা চলে যাওয়াতে দেশের মানুষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত এই মুহূর্তে ব্রিটেনের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সব থেকে বেশি কর বসেছে ব্রিটিশ নাগরিকদের ওপর। পাশাপাশি চরম মূল্যবৃদ্ধি বেকায়দায় ফেলেছিল ঋষি সুনাকের সরকারকে। তার জেরেই এই নির্বাচনে সরকার বিরোধী হাওয়া যথেষ্ট তীব্র ছিল। আর সেই হাওয়ায় ভর করেই ‘৪০০’র বৈতরনী পেরিয়েছে লেবার পার্টি। 

বিগত পাঁচ বছর ধরেই ব্রিটেনের মসনদে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছিল। প্রথমে বরিস জনসন তারপর স্বল্প দিনের জন্য লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেছিলেন। অতঃপর ট্রাসের পতন হলেই ডাউনিং স্ট্রিটে প্রবেশ করেছিলেন ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির জামাই ঋষি সুনাক। প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিসেবে ডাউনিং স্ট্রিটে পা রেখেছিলেন তিনি।

মুখ পুড়তেই বড় তোপ রাজ্যপালের, স্পিকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির দুয়ারে আনন্দ বোস!

আর তাঁকে ঘিরেই ওই দেশের ভারতীয় প্রবাসীদের মনে অনেক আশা ও আকাঙ্খা দেখা দেয়। ব্রিটেনের মসনদে প্রথম হিন্দু প্রধানমন্ত্রী ঋষি আসায় ভারতীয় হিন্দুদের মধ্যেও গর্ব ও রাজনৈতিকভাবে আবেগ বিহ্বল মনোভাব দেখা দিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ছবিতে দেখা গিয়েছিল গরুর প্রতি তাঁর বিশেষ প্রেম। যা সহজেই মন জিতে নেয় অনেকের। ভারতের সঙ্গে তাঁর এই নাড়ির যোগ কোথাও যেন তাঁকে আর পাঁচ জন রাষ্ট্রনেতার থেকে আলাদা স্থান দেয় ভারতীয়দের মনে।

এবার সেই ভারতীয় ‘হিন্দু ‘ সুনাকের বিদায় নেওয়ার সময় এসে গিয়েছে। বিগত কিছুদিন ধরেই দক্ষিণ এশিয় হওয়ার কারণে তাঁকে হজম করতে অসুবিধা হচ্ছিল জাত-ব্রিটিশ কট্টোর সুনাক বিরোধীদের। সমর্থকদের মধ্যেও তাঁকে নিয়ে বাড়ছিল অসন্তোষ। ভোটেই তাঁর প্রতিফলন পাওয়া গেল। তবে ভারতের ওপর দু’শো বছর রাজত্ব করা ইংরেজ সরকারের বুকে দাড়িয়ে এক ভারতীয় ‘হিন্দু’র ক্ষমতা প্রদর্শন হয়তো আগামী দিনে মনে রাখবে ভারত।