কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্যে নতুন করে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। বিজেপির দুই শীর্ষ নেতা সুকান্ত মজুমদার ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ওরা যদি CISF ছাড়া বাইরে বেরোয়, আমি খুন করে দেব।” এছাড়াও কল্যাণ শুভেন্দু এবং সুকান্ত কে ‘ছাগল’ ‘পাঠা’ বলেও কটাক্ষ করেন। এই মন্তব্য ঘিরে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিজেপি।
পলাশের ছদ্মবেশে গেরুয়া রাজ্যে গ্রেফতার অনুপ্রবেশকারী মঈনুদ্দিন
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার হাওড়ায়। সংবাদ মাধমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওরা তো দিল্লি থেকে CISF পাহারা নিয়ে ঘোরে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, CISF ছাড়া ওরা বাইরে বেরোক, আমি দেখে নেব। খুন করে দেব।” এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপি নেতারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
SHOCKING : TMC MP Kalyan Banerjee threatening to kill BJP leaders Sukanto Majumdar and Suvendu Adhikary if they come without CISF!
Kalyan Banerjee has forgotten that he has to attend winter session of parliament in Delhi soon! pic.twitter.com/nxqrxku9Nq
— Megh Updates 🚨™ (@MeghUpdates) November 3, 2025
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এটাই তৃণমূলের আসল চেহারা। যারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে থাকে, তারা আসলে সন্ত্রাস ও হুমকির রাজনীতি করে।” শুভেন্দু অধিকারীও প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদ সদস্য হয়ে এভাবে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন — এটা ফৌজদারি অপরাধ।
আমরা এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও সংসদে বিষয়টি তুলব।” এদিকে, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব এই মন্তব্যের পর তীব্র নিন্দা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের এক মুখপাত্র বলেন, “একজন সাংসদ যিনি কয়েকদিন পরেই দিল্লির শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তিনি কি জানেন তাঁর কথার আইনগত পরিণতি কী হতে পারে?”
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই মন্তব্যের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায় (criminal intimidation) মামলা দায়ের করা যেতে পারে। একজন সাংসদের মুখ থেকে এই ধরনের কথা আসা গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
\রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন পৌরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে, এবং এই ধরনের উসকানিমূলক মন্তব্যে দলগুলির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়বে। বিজেপি চাইছে বিষয়টি সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যেতে, অন্যদিকে তৃণমূল চাইছে ঘটনাটি দ্রুত থিতিয়ে যাক।
এদিকে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কোনো ক্ষমা চাননি। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি যা বলেছি, তার পিছনে যুক্তি আছে। বিজেপি নেতারা সাধারণ মানুষের রক্তে রাজনীতি করছে।” এই মন্তব্য আরও বিতর্ক বাড়িয়েছে।
সব মিলিয়ে, রাজ্য রাজনীতিতে ফের আগুন জ্বালাল কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘হত্যার হুমকি’। এখন নজর দিল্লির দিকে কারণ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হচ্ছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন, যেখানে এই মন্তব্য নিয়ে কেন্দ্রীয় বিরোধীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হতে পারে।
