কলকাতা: জগদ্ধাত্রী বিসর্জনে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এক সেনা জওয়ানকে প্রকাশ্যে চড় মারার অভিযোগে ছড়াল চাঞ্চল্য। অভিযুক্তের নাম দেবজিত সরকার, যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের ক্রীড়া সেলের সভাপতি এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে জানা গিয়েছে।
⚠️TMC leader SLAPS Indian Army Jawan⚠️
Debjit Sarkar – Close associate of Babun Banerjee, MAMATA’s brother,and TMC sports cell president‼️
During Visarjan he was drunk and assaulted an Indian Army Jawan‼️#DeshBirodhiMamata has put such anti nationals in charge of things❗️… pic.twitter.com/WCQ4aj0AN5
— BJP West Bengal (@BJP4Bengal) November 3, 2025
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহের শেষদিকে হুগলির এক বিসর্জন মিছিলে। দেবজিত সরকার তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। মিছিলের ভিড়ে কর্তব্যরত এক সেনা জওয়ানকে তিনি হঠাৎ চড় কষান।
দেশের জার্সিতে খেলেই ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের নেপথ্যে এই তারকা!
উপস্থিত জনতা প্রথমে হতবাক হয়ে যায়, তারপর স্থানীয়দের মধ্য থেকে প্রতিবাদের আওয়াজ ওঠে। সেনা জওয়ানটি প্রাথমিকভাবে প্রতিক্রিয়া না দেখালেও, ঘটনার ভিডিও দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক মাধ্যমে।
ভিডিওতে দেখা যায়, দেবজিত সরকার হাতে মোবাইল নিয়ে কিছু নির্দেশ দিচ্ছেন, এমন সময় পাশে দাঁড়ানো জওয়ানকে তিনি আচমকাই চড় মেরে বসেন। সেই মুহূর্তে আশেপাশের লোকজন হতবাক হয়ে পড়ে। কয়েকজন তাঁকে থামানোর চেষ্টা করলেও, দেবজিত সেখানে থেকেই চেঁচিয়ে বলেন “আমাকে চেনো না আমি কে!”। এই দৃশ্যই পরবর্তীতে নেটমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভ উসকে দেয়।
তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ঘটনা অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থে। দলের এক মুখপাত্র জানান, “দেবজিত সরকারের বিরুদ্ধে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এখনও দায়ের হয়নি। ভিডিওটি আংশিক, পুরো ঘটনাটা দেখা যায়নি। বিজেপি এই সুযোগে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।” যদিও দলের ভেতরেই কেউ কেউ স্বীকার করেছেন, “যদি ঘটনাটি সত্য হয়, তাহলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”
ভারতীয় সেনার এক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল বলেন, “একজন সৈনিকের ইউনিফর্ম শুধু একজন ব্যক্তির নয়, গোটা জাতির সম্মান। সেই ইউনিফর্মে হাত তোলা মানে দেশের প্রতি অসম্মান। যে-ই হোক না কেন, এমন আচরণ অগ্রহণযোগ্য।” ঘটনার পর এলাকায় দেবজিত সরকারের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার খবরও পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের বক্তব্য, “আমরা এমন নেতাকে চাই না, যে দেশের জওয়ানকে মারধর করে। এটা বাঙালির সংস্কৃতি নয়।” এই ঘটনাকে ঘিরে প্রশাসনিক তদন্তের দাবি উঠেছে। হুগলি জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, “ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


