কোচবিহার: বাংলায় ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা SIR এর দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল SIR এর বিরোধিতায় পিছিয়ে নেই। যে কোনো রকম ভাবে তারা SIR এ বাধা দেবে এমন প্রয়াস এবং রাজনৈতিক উস্কানিমূলক কথাবার্তায় আজ বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল। এই আবহেই কোচ বিহারের এক তৃণমূল নেতা সংবাদমাধ্যমে কথা বলার সময় বলেন SIR করতে এলেই BLO দের গাছে বেঁধে রাখা হবে।
এই অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি প্রকাশ্য সভায় বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেছেন, যা শুধু অশালীন নয়, সরাসরি হুমকি হিসেবেও দেখা হচ্ছে। একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বর্মণ বলেন “প্রত্যেক বুথ লেভেল অফিসারকে ২০০০ জন ভোটারের সম্পূর্ণ তালিকা নিয়ে আসতে হবে।
বায়ুসেনার শক্তি প্রদর্শন! ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর দিয়ে উড়বে তেজস, রাফায়েল
কেউ যদি তা না করে, তাকে বেঁধে রাখব।” তার এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায় একটি জনসভায় গলা ফাটিয়ে বলেছিলেন SIR করতে এলেই BLO দের গাছে বেঁধে রাখার কথা। এই বক্তব্যের পর থেকেই বিরোধীরা সরব। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস রীতিমতো ভয় দেখিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে চাইছে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে ট্যাগ করে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন “এটি নিছক এক ব্যক্তির উগ্র মন্তব্য নয়, এটি তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কৌশলের অংশ। বুথ পর্যায়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই এই হুমকি।” তিনি আরও লেখেন, “BLO-রা হলেন নির্বাচন কমিশনের নিযুক্ত কর্মকর্তা। তাদের কাজই হলো ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
কিন্তু যখন ক্ষমতাসীন দলের নেতা প্রকাশ্যে বলেন ‘যে BLO তালিকা আনবে না তাকে বেঁধে রাখা হবে’, তখন সেটি কেবল ভয় দেখানো নয়, গণতন্ত্রের শ্বাসরোধ।” রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন নিয়ে ভয় এবং আতঙ্কে দিন কাটছে তৃণমূলের। তা না হলে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের মত রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব কি করে বলেন যে বুথ লেভেল অফিসের দের গাছে বেঁধে রাখার কথা।
আবার অনেকে বলেছেন বাংলার মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা চায় কিন্তু তৃণমূল উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে নির্বাচন কমিশনের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, “গিরীন্দ্রনাথবাবু কোনওভাবেই BLO-দের হুমকি দেননি।
তিনি শুধুমাত্র প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়াতে বলেছেন।” তবে বিরোধী মহল এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বলেছেন ভিডিওর ভাষা ও সুরে অনেকেই দেখছেন এক ধরনের ‘ডনসুলভ’ আচরণ। তারা আরও বলেছেন যে এবার আর গুন্ডামি করে সাধারণ মানুষের অধিকারকে খাটো করা যাবে না।



