‘এক বিহারি সব পে ভারী!’ নির্বাচনের আগে কড়া বার্তা তেজস্বীর

tejashwi-yadav-amit-shah-bihar-elections-speech

পটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে রাজনৈতিক ময়দানে ফের তেজস্বী-অমিত সংবাদ! রাজ্যের রাজনৈতিক আবহে নতুন করে রং চড়ালেন মহাগঠবন্ধনের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী তেজস্বী যাদব। শনিবার আরজেডি নেতা একটি জনসভায় সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে আক্রমণ শানালেন। তাঁর দৃপ্ত কণ্ঠে শোনা গেল একটাই বার্তা “তেজস্বী ভয় পায় না, আমি বিহারী ছেলে, ‘এক বিহারি সব পে ভারী!’”

Advertisements

ভরা জনসভায় তেজস্বীর বক্তব্যে গর্জে উঠল সমর্থকদের ভিড়। তিনি বলেন, “অমিত শাহকে বলতে চাই, তেজস্বী ভয় পায় না। আমি বিহারী ছেলে ‘এক বিহারি সব পে ভারী’ এটা মনে রাখবেন।” এরপরেই তিনি অতীতের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমার বাবা লালুপ্রসাদ যাদব একসময় অমিত শাহের গুরু এলকে আদবাণীকে গ্রেফতার করেছিলেন। আজ সেই অমিত শাহ আমায় হুমকি দিচ্ছেন! আমি লালু যাদবের ছেলে, ভয় আমার ডিএনএ-তেই নেই।”

   

সুদীপ-শাকিবের দাপটে ৩৩৬, তবুও চিন্তার ভাঁজ বাংলার!

এই মন্তব্যের পরই বিহারের রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনার ঢেউ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তেজস্বী কার্যত রাজ্যের যুব ভোটারদের মন জয় করতে চাইছেন। বিহারে বর্তমানে ভোটের ময়দান উত্তপ্ত, এবং মহাগঠবন্ধন (আরজেডি-কংগ্রেস-লেফট) বনাম এনডিএ (বিজেপি-জেডিইউ) — এই দুই শিবিরের মধ্যে লড়াই ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।

তেজস্বী এদিন অমিত শাহের সাম্প্রতিক মন্তব্যেরও জবাব দেন। শাহ বিহার সফরে এসে বলেছিলেন, “তেজস্বী যাদবের সরকার মানে দুর্নীতি, গুণ্ডারাজ আর পরিবারতন্ত্র।” তার উত্তরে তেজস্বীর কটাক্ষ, “যারা দেশে বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি আর কৃষকদের দুর্দশা লুকিয়ে রাখে, তারাই অন্যকে গুণ্ডা বলে। আজ বিহারের যুবকরা কাজ চায়, সুযোগ চায়, আর বিজেপি শুধু ভয় দেখাতে জানে।”

Advertisements

আরজেডি নেতার এই দৃপ্ত অবস্থানকে সমর্থন করেছেন মহাগঠবন্ধনের একাধিক নেতা। তাঁদের মতে, “তেজস্বীর বক্তব্যে বিহারের আত্মসম্মান ও যুবশক্তির প্রতিফলন ঘটেছে।” অন্যদিকে, বিজেপি শিবিরের তরফে এই মন্তব্যকে “জনসভামুখী নাটক” বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিজেপি মুখপাত্রের বক্তব্য, “তেজস্বী যাদব জানেন তাঁর দল ভরাডুবির মুখে। তাই জনসভায় নাটকীয় সংলাপ বলেই জনগণের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছেন।”

তবে রাজনৈতিক মহলের মত, তেজস্বীর এই আক্রমণ শুধুমাত্র অমিত শাহকেই নয়, বিজেপির নেতৃত্বকেও অস্বস্তিতে ফেলেছে। তাঁর ভাষণে বিহারীয় স্বাভিমানের সুর এবং পারিবারিক ঐতিহ্যের উল্লেখ স্পষ্ট। ২০২৫-এর নির্বাচনে বিহারের তরুণ ভোটারদের বড় ভূমিকা থাকবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, আর তেজস্বী সেই দিকেই নজর দিচ্ছেন “যুবশক্তি মানে পরিবর্তনের প্রতীক, ভয় নয়, আশা।”

বিহারের রাজনৈতিক বাতাস তাই এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বোঝা যাবে তেজস্বীর “এক বিহারি সব পে ভারী” স্লোগান সত্যিই কতটা ভারী প্রভাব ফেলতে পারে ভোট বাক্সে।