“ভারতীয় বাঙালি মুসলমান যদি সজাগ হত…” — চাঞ্চল্যকর তত্ত্ব তথাগত রায়ের

Tathagata Roy

আবারও বিস্ফোরক মন্তব্য করে রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি তথাগত রায়ের (Tathagata Roy)। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি দীর্ঘ পোস্টে তিনি ভারতীয় বাঙালি মুসলমানদের প্রতি তীব্র আক্রমণ শানান। এই পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

Advertisements

তথাগত রায়ের দাবি, বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় আক্রমণ চালানো হচ্ছে, যার অধিকাংশই বাঙালি মুসলমানদের তরফ থেকে আসছে। তবে এসব তিনি মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, “আজ যে ভারত জুড়ে বাংলাদেশি মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর লড়াই শুরু হয়েছে, তা দেখে ভারতীয় বাঙালি মুসলমানদের মনে ভয় ঢুকেছে। আর এ ভয় মোটেও অকারণ নয়।”

   

তিনি অভিযোগ করেছেন, বছরের পর বছর ধরে যে ‘ভোটব্যাঙ্ক’ রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তা এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। তাঁর মতে, এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের জনবিন্যাস বদলে বাঙালি হিন্দুদের কোণঠাসা করে দেওয়া। আর এতে ভারতীয় বাঙালি মুসলমানদের নীরব সমর্থন ছিল বলেই আজ পরিস্থিতি এতটা জটিল হয়ে উঠেছে।

তথাগত লিখেছেন, “যদি ভারতীয় বাঙালি মুসলমান তখন সজাগ হয়ে এই ষড়যন্ত্রের বিরোধিতা করত, তাহলে আজ তাদেরও এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হত না। যারা আজ আমার বিরুদ্ধে গালিগালাজ করছে, তারা নিজেরাই পরোক্ষে নিজেদের বিপদের উৎস হয়ে উঠেছে।”

Advertisements

আরও একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্যে তথাগত বলেন, “আজ ভারতীয় বাঙালি মুসলমানদের কর্তব্য হল বাংলাদেশি মুসলমান অনুপ্রবেশকারী, বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের, চিহ্নিত করে প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।”

সবচেয়ে বিতর্কিত অংশ ছিল তথাগতর এই মন্তব্য: “শুধু একজোট হয়ে ভোট দেওয়া আর ‘আমরা পাঁচ, আমাদের পঁচিশ’ নীতি বাঁচাতে পারবে না।” এই বক্তব্যকে অনেকেই সাম্প্রদায়িক ও ঘৃণাবাচক বলে আখ্যা দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তথাগত রায়ের এই পোস্ট আবারও প্রমাণ করল যে বিজেপির একটি অংশ এখনো মুসলিম বিরোধী রাজনীতিকে হাতিয়ার করে রাজ্যে প্রাসঙ্গিক হতে চায়।

তথাগত রায়ের এই মন্তব্য নিছক একটি ফেসবুক পোস্ট নয়—এটি রাজ্য রাজনীতির ভবিষ্যৎ প্রবণতার ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। সমাজমাধ্যমে ইতিমধ্যেই বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে এবং দুই মেরুর রাজনৈতিক মতাদর্শের মধ্যে সংঘর্ষ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।