মমতার SIR রাজনীতির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি তরুণজ্যোতির

tarunjyoti-slams-mamata-over-sir-ghost-voter-controversy-2025

কলকাতা: বঙ্গ রাজনীতিতে SIR বা ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন নিয়ে যে উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছিল, (Tarunjyoti)তা আরও এক ধাপ বেড়ে গেল তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বিস্ফোরক মন্তব্যে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি SIR–এর “অমানবিক চাপ” এবং BLO মৃত্যুর বিষয়টি তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট করে নির্বাচন কমিশনকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন।

Advertisements

কিন্তু সেই বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন রাজনৈতিক নাটক” বলে কড়া পাল্টা দিলেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি। তাঁর দাবি মমতার এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, কারণ স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি হলে তৃণমূলের “ঘোস্ট ভোট” আর টিকবে না।

   

আসন্ন বিশ্বকাপের পরেই ফ্রান্সের দায়িত্বে জিদান?

তরুণজ্যোতি সরাসরি বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যে ছবি আঁকছেন, বাস্তব তার সম্পূর্ণ উল্টো। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী বিহার ইতিমধ্যেই SIR শেষ করেছ দেশের মোট ১২টি রাজ্যে SIR চলছে। কোথাও বিশৃঙ্খলা, আতঙ্ক বা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই অস্বাভাবিক প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে, কারণ SIR “নকল ভোটারদের” সংখ্যা কমিয়ে দেবে।

সবচেয়ে বিতর্কিত অংশটি আসে যখন তিনি জলপাইগুড়িতে মৃত BLO শান্তি মুনি এক্কার প্রসঙ্গ তোলেন। সেই মৃত্যু নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতাই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু তরুণজ্যোতির সাফ বক্তব্য “ভোটার তালিকা সংশোধনে আঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা মনোনীত নন। তাহলে তাঁর নাম কে পাঠাল? রাজ্য সরকার।” অর্থাৎ তাঁর অভিযোগ, BLO এর উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে নির্বাচন কমিশন নয়, রাজ্য সরকারই। কারণ রাজ্যে যথেষ্ট নিয়মিত সরকারি কর্মী নেই, যা নাকি “তৃণমূলের ১৪ বছরের নিয়োগ দুর্নীতির ফল”।

Advertisements

SIR তিন বছর ধরে চলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবি নিয়েও তরুণজ্যোতি কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, “হয় তাঁর স্মৃতি বিভ্রান্ত করছে, নয়তো তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করছেন।” এরপর তিনি ২০০২ সালের পশ্চিমবঙ্গের SIR-এর টাইমলাইনের উদাহরণ তুলে ধরেন ২০০২ সালের SIR ৯০–১০০ দিনের মধ্যেই শেষ হয়েছিল, তা-ও তখন প্রযুক্তি বা ডিজিটাইজেশন কিছুই ছিল না। এই তথ্য তুলে ধরে তিনি প্রশ্ন তোলেন “২০০২ সালে যেখানে মাত্র তিন মাস লেগেছিল, ২০২৫ সালে তা তিন বছর লাগবে কেন?”

তরুণজ্যোতি আরও দাবি করেন, তৃণমূল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে SIR–কে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এমনকি জেলায় জেলায় যে মৃত্যুগুলিকে “SIR–এর চাপ” হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে, তা নাকি আসলে রাজনৈতিক নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। তাঁর অভিযোগ “কেবল মমতা সরকারই মরিয়া চেষ্টা করছে প্রতিটি আকস্মিক মৃত্যুকে SIR-এর চাপ হিসেবে দেখাতে, কারণ ভূত ভোটাররা উধাও হয়ে যাবে।”

তিনি আরও তীব্র প্রশ্ন তোলেন যদি চাপেই মৃত্যু হয়ে থাকে, তবে তৃণমূল সরকারের চাকরি দুর্নীতির কারণে কতজন যুবকের মৃত্যু হয়েছে? চাকরি না পাওয়ায় কত পরিবার ভেঙে গেছে? কতজন হতাশায় দিশেহারা হয়েছে? তাঁর অভিযোগ গত ১৩ বছরের নিয়োগ কেলেঙ্কারি রাজ্যের হাজারো পরিবারের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিয়েছে।

সবশেষে তরুণজ্যোতি বলেন “ তৃণমূল একমাত্র পার্টি যারা SIR শুরু হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এবং এর কারণও তিনি ব্যাখ্যা করেন যদি ভোটার তালিকা স্বচ্ছ হয়, তবে “মৃত মানুষ, পরিযায়ী মানুষ এবং নকল পরিচয়ধারী ভোটাররা আর ভোট দিতে পারবে না”, ফলে তৃণমূলের রাজনৈতিক ভিত্তি নাকি নড়ে যেতে পারে।