কলকাতা: নাগরাকাটায় বন্যাত্রাণ পৌঁছতে গিয়ে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হন সাংসদ শংকর ঘোষ এবং বিধায়ক খগেন মুর্মু। মার খেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন খগেন মুর্মু। বুধবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সেই নাগরাকাটায় শংকর ঘোষ এবং খগেন মুর্মুকে নিয়ে পথে নামেন বিজেপি কর্মীরা।
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান তুলে সরব হন বিজেপি কর্মীরা। শুভেন্দু অধিকারী বলেন রাজ্যের আদিবাসি সম্প্রদায়কে এক হতে হবে। খগেন মুর্মু তাদেরই প্রতিনিধি এবং তার এই হেনস্থা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। তিনি আরও বলেন খগেন মুর্মুর শরীর থেকে যে রক্ত বেরিয়েছে তার হিসেবে নেওয়া হবে।
একই সঙ্গে আজ কোচবিহারের ডিএম অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বঙ্গ বিজেপি কর্মীরা। এই বিক্ষোভে শুভেন্দুর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। শুভেন্দু এবং বিজেপি কর্মীরা হাতে কালো প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছেন। মিছিলের শুরুতেই শুভেন্দু অধিকারী আক্রমণ শানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে।
তাঁর কটাক্ষ, “আদিবাসী সমাজকে ভয় দেখিয়ে, মারধর করে থামানো যাবে না। খগেন মুর্মু তাঁদের গর্ব, তাঁর রক্তের হিসেব এই সরকারকে দিতে হবে।” তাঁর এই বক্তব্যে মিছিলে উপস্থিত বিজেপি কর্মীরা একযোগে স্লোগান তুললেন “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাই!”
মিছিলটি নাগরাকাটা বাজার এলাকা ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। কর্মসূচির শেষে বিজেপি কর্মীরা ডিএম অফিস ঘেরাও করে তীব্র বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের হাতে ছিল কালো পতাকা, প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার— “খগেন মুর্মুর রক্তের বিচার চাই” লেখা স্লোগানে মুখরিত হয় গোটা এলাকা।
এই কর্মসূচিতে শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যে রাজ্যে বিরোধী নেতা নিরাপদ নয়, সেই রাজ্যে গণতন্ত্র মৃত। তৃণমূল ভয় দেখিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ করতে চায়, কিন্তু বিজেপি কখনও পিছিয়ে যাবে না।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এই মুহূর্তে দার্জিলিঙ সফরে এসেছেন এর মধ্যেই বিরোধী দলনেতার এই মিছিল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করেছে তা বলাই বাহুল্য।
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে বন্যাত্রাণ দিতে এসে এইভাবে আক্রান্ত হতে হয়ে লজ্জাজনক কিন্তু তার কোনও প্রতিকার হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতালে গিয়ে সমবেদনা জানালেও তাতে চিড়ে ভেজেনি। আজ শুভেন্দুর নেতৃত্বে এই মিছিল কি প্রভাব ফেলে রাজ্য রাজনীতিতে এবং সাধারণ মানুষ কিভাবে তাদের প্রতিক্রিয়া দেয় সেটাই দেখার।