কলকাতা ২ ডিসেম্বর: দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়ে বাংলাদেশে চলে যেতে হয়েছিল (Sunali Khatoon humanitarian return) অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুনকে। সোমবার বাংলাদেশের আদালত সোনালীকে জামিন দিয়েছে। তার সঙ্গে ভারতের শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে তাড়াতাড়ি সোনালীকে ভারতে নিয়ে আসতে হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ফের বিস্ফোরক বিজেপি নেতা এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি বলেছেন এই ঘটনা অর্ধসত্য।
তরুণজ্যোতি তিওয়ারি দাবি করেছেন, সোনালীর ভারত প্রত্যাবর্তনকে কিছু মহল ‘সম্পূর্ণ আইনি জয়’ বা ‘নাগরিকত্ব প্রমাণ’ হিসেবে তুলে ধরছেন, যা তাঁর মতে বিভ্রান্তিকর। বরং তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, সোনালীকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল শুধুমাত্র মানবিক কারণে, কারণ তিনি গর্ভাবস্থায় ছিলেন। ভারতের আদালত জরুরি চিকিৎসা এবং শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয় এটি কোনওভাবেই চূড়ান্ত রায় বা নাগরিকত্ব বা নথি যাচাইয়ের শেষ সিদ্ধান্ত নয়।
সোমবার সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে সামিরুল ইসলাম একটি পোস্ট করে বলেন যে এই জয় তৃণমূলের নৈতিক জয়। তার পরিবর্তে তরুণজ্যোতি বলেছেন “মানুষকে অর্ধসত্য খাওয়াবেন না, মি. ইসলাম। আসলে কে ভারতে ফিরেছে এবং কোন আইনি ভিত্তিতে? সোনালী খাতুন ও তার শিশুকে শুধু মানবিক কারণে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আদালত তার অগ্রসর গর্ভাবস্থার কথা বিবেচনা করে অবিলম্বে চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছিল। এটা ছিল জরুরি ভিত্তিতে দেওয়া মৌখিক নির্দেশ চূড়ান্ত রায় নয়।”
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে মামলাটি অত্যন্ত জটিল। কারণ একদিকে রয়েছে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীর নিরাপত্তা ও চিকিৎসার প্রশ্ন; অন্যদিকে রয়েছে নাগরিকত্ব ও বৈধ নথিপত্রের কঠোর সরকারি প্রক্রিয়া। আদালতও দুই দিকের ভারসাম্য বজায় রেখে এগোচ্ছে এটি স্পষ্ট। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সোনালী এবং তাঁর নবজাতকের শারীরিক পরীক্ষা, পরিচয়পত্র যাচাই, এবং তাঁদের বক্তব্য শোনার সুযোগ সবই নিশ্চিত করার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মানবিক ভিত্তিতে সাময়িক স্বস্তি মেলে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নির্ভর করে সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়া ও নথিপত্রের উপর। তাই বর্তমানে কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির দাবি চূড়ান্ত সত্য হিসেবে ধরা যাবে না। এদিকে, সোনালী খাতুনের পরিবার জানিয়েছে, তাঁরা পুরোপুরি আইনি পথে এগোতে চান।
তাঁর চিকিৎসার জন্যও স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতা করছে বলে জানা গেছে। তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বক্তব্যে স্পষ্ট বিষয়টি মানবিক হলেও এটিকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করা উচিত নয়। এখন নজর থাকবে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানিতে সোনালীর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথিপত্র কী বলে এবং তাঁর আইনি অবস্থান কোন দিকে যায়।
