সুজয়ের পরবর্তী উত্তরসূরি নিয়ে জোর জল্পনা, কে নেবেন দায়িত্ব?

sujay-chakraborty-resigns-who-will-lead-howrah-municipality-next

মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে হাওড়া (Howrah) পুর প্রশাসনে দুই গুরুত্বপূর্ণ মুখের পদত্যাগ রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। দক্ষিণ হাওড়ার তৃণমূল নেতা এবং হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চৌধুরীর পদত্যাগের রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার রাতে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, এর আড়ালে অন্য কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ লুকিয়ে আছে?

Advertisements

সুজয় চক্রবর্তী পদত্যাগের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, ‘‘একেবারে ব্যক্তিগত কারণে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ কিন্তু রাজনৈতিক মহলের একাংশ তা মানতে রাজি নয়। কারণ, এর কয়েক দিন আগেই দলের নির্দেশে পদত্যাগ করেন সৈকত চৌধুরী। তবে দলীয় মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে— এটা কি তৃণমূলের ভেতরে ‘পারফরম্যান্স রিভিউ’-র ফল?

   

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভায় প্রশাসনিক রদবদলের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। পুজোর ঠিক আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, ‘‘পারফরম্যান্স অনুযায়ী পুর প্রশাসনে পরিবর্তন আসবে।’’ তাঁর সেই মন্তব্যের পর থেকেই নানা মহলে আলোচনা শুরু হয় যে, দল হয়তো পুর স্তরে কর্মক্ষমতার ভিত্তিতে বড়সড় শুদ্ধি অভিযান চালাতে চলেছে। হাওড়া থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেই অনেকে মনে করছেন। হাওড়া পুরসভা রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক প্রশাসনিক সংস্থা। কলকাতার লাগোয়া এই শহরটি দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ফলে এখানে যে কোনও পরিবর্তন বা নেতৃত্বে টানাপোড়েন রাজ্যের রাজনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

অন্যদিকে, বিরোধী শিবির এই পদত্যাগগুলিকে ঘিরে আক্রমণ শানিয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, ‘‘এটা তৃণমূলের ভেতরের বিভাজনের প্রকাশ। উন্নয়ন নয়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এখন দলের ভিত কাঁপাচ্ছে।’’ কংগ্রেস ও বাম শিবিরও একই সুরে বলেছে, ‘‘তৃণমূলের তথাকথিত শুদ্ধি অভিযান আসলে দলের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতারই প্রমাণ।’’

Advertisements

এখন নজর সবার এক জায়গায়— হাওড়া পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এমন কাউকেই সামনে আনবে, যিনি প্রশাসনিকভাবে দক্ষ এবং দলের অভ্যন্তরে গ্রহণযোগ্য। কারণ, হাওড়া কেবল একটি পুরসভা নয়, বরং তৃণমূলের নগরভিত্তিক সংগঠনের এক বড় পরীক্ষার ক্ষেত্র।