দেশে ফেরার পরেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি কৃতজ্ঞ সোনালি

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় কারাবাস, অনিশ্চয়তার অন্ধকার ও দশ মাসে পড়তে থাকা গর্ভের ভার—তার মাঝেই শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরলেন মালদার সোনালি বিবি (Sonali Bibi)। দিল্লি…

After Arrival, Sonali Publicly Thanks Mamata and Abhishek

পাঁচ মাসেরও বেশি সময় কারাবাস, অনিশ্চয়তার অন্ধকার ও দশ মাসে পড়তে থাকা গর্ভের ভার—তার মাঝেই শেষ পর্যন্ত দেশে ফিরলেন মালদার সোনালি বিবি (Sonali Bibi)। দিল্লি থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পর তাঁকে অনুপস্থিত নথিপত্রের অভিযোগে বাংলাদেশে আটক করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রক্রিয়া, নানান জটিলতা এবং প্রশাসনিক ঘেরাটোপের মধ্যে আটকে ছিলেন তিনি। অবশেষে বহু চেষ্টার পর মালদার মেহদিপুর সীমান্ত দিয়ে সোনালি বিবি ও তাঁর ছোট ছেলেকে নিজের দেশে ফিরিয়ে আনা হল। পরিবারের সদস্যদের মুখে দীর্ঘদিন পর স্বস্তির হাসি, আর সোনালির চোখে ফিরে পাওয়া জীবনের নীরব কৃতজ্ঞতা।

Advertisements

স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসনিক দফতরের খবর অনুসারে, সোনালি বিবি দিল্লিতে গিয়েছিলেন নিজের ব্যক্তিগত কাজের সূত্রে। কিন্তু নানা কারণে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে তাঁকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই শুরু হয় তাঁর দুর্দশার অধ্যায়। বাংলাদেশে নথিপত্র না থাকার কারণে তাঁকে আটকে দেওয়া হয় এবং পরবর্তী কয়েক মাস কেটে যায় জেলের অভ্যন্তরে। গর্ভবতী অবস্থায় এমন যন্ত্রণা তাঁকে শারীরিকভাবে যেমন দুর্বল করেছে, তেমনই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। কারাগারে থাকা অবস্থাতেই দিন গোনা শুরু করেছিলেন—কবে আবার নিজের মাটিতে পা রাখতে পারবেন। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিশেষ করে তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হয় বলে সূত্রের দাবি। সোনালির পরিবারের কাছ থেকেও সাহায্যের আবেদন পৌঁছেছিল সম্পর্কিত কর্তৃপক্ষের কাছে। বিভিন্ন স্তরে যোগাযোগের পর অবশেষে তাঁর প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম হয়। বুধবার বিকেলে মেহদিপুর সীমান্ত দিয়ে তাঁকে দেশে ফেরত আনা হয়। সীমান্ত চেকপোস্টে পৌঁছতেই আবেগে ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁর সন্তানকে বুকের কাছে জড়িয়ে বলেন, “শেষ পর্যন্ত নিজের দেশে ফিরতে পারলাম, এটাই আমার সবচেয়ে বড় স্বস্তি।”

   

এ দিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ঘটনায় বিশেষভাবে নজর রেখেছিলেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি। জানা গিয়েছে, সোনালি বিবি দেশে ফেরার পরে খুব শীঘ্রই তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন অভিষেক। শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, মানবিকতার তাগিদেই তিনি এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রের অভিমত। সোনালির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতির আপডেট জেনে এসেছেন তিনি। ঘনিষ্ঠ মহলের কথায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এটা শুধুমাত্র একজন মহিলার দেশে ফেরা নয়, এটা পশ্চিমবঙ্গের জয়। আমরা বারবার দেখিয়েছি—মানুষ বিপদে পড়লে তাদের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের কর্তব্য। প্রশাসন, সরকার, দলের সর্বস্তরের উদ্যোগে এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে।” তাঁর এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, সোনালি বিবির স্বাস্থ্য পরীক্ষা সেরে তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেহেতু তিনি অন্তঃসত্ত্বা, তাই বিশেষ চিকিৎসা নজরদারি রাখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে সরকারি হাসপাতালেও তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে। পরিবার জানিয়েছে, এতদিনের কষ্টের পরে এখন তাঁকে সুস্থ করে তোলাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য।

 

Advertisements