কলকাতা: সোনালী খাতুন, (Sonali Khatun) নামটার সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত। আবার হয়তো অনেকে ভুলেও গিয়ে থাকতে পারেন। বীরভূমের বাসিন্দা এই সোনালী পরিবার সহ রোহিনীতে বসবাস করতেন। তার স্বামী ছিলেন একজন পরিযায়ী শ্রমিক।
বাংলা বলার অপরাধে দিল্লি পুলিশ তাদের পুরো পরিবারকে আটক করে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। তখন সোনালী অন্তঃসত্ত্বা। আজ বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জের আদালত সোনালী সহ ৬ জনকে জামিন দিয়েছে। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা জানিয়ে দিয়েছেন অবিলম্বে সোনালীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
খেলা দেখবেন স্বয়ং প্রভু জগন্নাথ! পেলেন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আমন্ত্রণপত্র
চলতি বছরের জুনে, দিল্লির রোহিণী এলাকায় বিদেশি নাগরিক শনাক্তকরণ তল্লাশির নামে পুলিশি অভিযানে দুটি পরিবারকে আটক করা হয়। পরিবারের দাবি তারা আধার, প্যান, রেশন কার্ড, বীরভূমের জমির নথি সবই দেখিয়েছিল। তবুও দিল্লি পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই অসম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। পরে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড তাঁদের আটক করে “অবৈধ প্রবেশ” মামলায় চাপাইনবাবগঞ্জ জেলে পাঠায়।
এই অত্যাচারী পরিস্থিতিতে সোনালীর বাবা ভদু শেখ কলকাতা হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা করেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে তাঁর মেয়ের গর্ভস্থ সন্তানও রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়তে পারে। ২৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জাস্টিস তপব্রত চক্রবর্তী ও ঋতব্রত মিত্র কড়া ভাষায় দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাঁরা বলেন “সন্দেহ যতই প্রবল হোক, তা প্রমাণের বিকল্প নয়। পুলিশের সামনে কোনও রক্ষাকবচ ছাড়া তথাকথিত ‘স্বীকারোক্তি’ সংবিধানের ১৪, ২০(৩) ও ২১-এর সরাসরি লঙ্ঘন।”
হাইকোর্ট এ-ও পর্যবেক্ষণ করে যে সোনালীর আধার-প্যান কার্ড অনুযায়ী তাঁর জন্ম ২০০০ সালে। তাহলে তিনি ১৯৯৮ সালে “অবৈধভাবে ভারতে এসেছেন” এই অভিযোগ একেবারেই অযৌক্তিক। আদালত আরও জানান, মে ২০২৫-এর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর আগে ৩০ দিনের তদন্ত বাধ্যতামূলক, যা পুরোপুরি লঙ্ঘন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে আজ এই মামলার নিস্পত্তি হয়েছে। আদালত সোনালী এবং তার পুরো পরিবারকে মুক্তি দিয়েছে। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুয়ায়ী তাদের ভারতেও নিয়ে আসার বন্দোবস্ত চলছে বলেও জানা গেছে। যদি জয়কে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের নৈতিক জয় বলে ব্যাখ্যা করেছে। তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন ‘নরখাদক অমিত শাহের’ জন্য ৬ টি প্রাণ যেতে বসেছিল কিন্তু আজ আদালতের রায়ে তাদের প্রাণ বাঁচল এবং এটা শুধুমাত্র তৃণমূলের লড়াইয়ের ফল।
