কলকাতা: বঙ্গে SIR বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন ঘিরে চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোর (SIR pressure)। আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করছে তৃণমূল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়ের দাবি শুধু ভোটার নয় দায়িত্ব প্রাপ্ত BLO রাও SIR এর চাপ সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। জলপাইগুড়ির মাল বাজারে এমনই একটি মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সরাসরি দায়ী করেছেন এই SIR এর প্রক্রিয়াকে।
বুধবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মমতা নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন “গভীর ভাবে মর্মাহত ও দুঃখিত। আজ আবারও আমরা মাল, জলপাইগুড়িতে এক বুথ লেভেল অফিসারকে হারালাম স্মৃতি শান্তি মুনি এক্কা, একজন আদিবাসী মহিলা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, যিনি চলমান SIR কাজের অসহনীয় চাপে নিজের জীবন শেষ করে দিয়েছেন।” মমতার অভিযোগ আরও তীব্র হয় যখন তিনি দাবি করেন, “SIR শুরুর পর থেকে ইতিমধ্যেই ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন কেউ ভয়ে, কেউ অনিশ্চয়তায়, কেউ অতিরিক্ত চাপ সামলাতে না পেরে।”
ভোট চুরি প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধীর মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বললেন বিচার ও প্রশাসনের সদস্যরা
তাঁর প্রশ্ন যে কাজ তিন বছর ধরে করা হত, তা মাত্র দুই মাসে গুটিয়ে ফেলার নির্দেশ কেন? ঠিক বিধানসভা ভোটের আগে, কেন এমন তড়িঘড়ি? মমতার দাবি, এতে স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে এবং তার ফল ভুগছেন সাধারণ BLO–রা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন “ভারতের নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক মালিকদের খুশি করতে BLO–দের উপর পরিকল্পনাহীন ও নিরলস কাজের চাপ চাপিয়ে দিচ্ছে।”
এই বক্তব্য সামনে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। তৃণমূলের নেতারা সরাসরি অভিযোগ করেছেন এই কাজের ধরণ BLOদের উপর “মানসিক অত্যাচার।” তাদের মত, বাড়ি বাড়ি গিয়ে দস্তাবেজ যাচাই, সংশোধন, ফর্ম আপলোড সব মিলিয়ে কাজের চাপ এমনই যে বহু BLO ঘুম, খাবার, বিশ্রাম কিছুই ঠিকমতো পাচ্ছেন না। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশন ও রাজ্যের বিরোধী দলগুলি এই অভিযোগকে রাজনৈতিক নাটক বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
বিজেপির তরফে প্রতিক্রিয়া SIR হচ্ছে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির একমাত্র পথ, আর তৃণমূলের “ভোটব্যাঙ্ক ভাঙার আতঙ্কেই” এমন অভিযোগ তুলছে মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মানছে, হঠাৎ বাড়তি কাজের চাপ BLOদের জন্য সত্যিই প্রভাব ফেলছে। অনেকেই জানিয়েছেন, সারাদিনের কাজ শেষ হতে হচ্ছে রাত দশটা-এগারোটা পর্যন্ত। তারপরও পরের দিন সকালেই ফের বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে সময় নেই, বিশ্রাম নেই, আর মাঠপর্যায়ে প্রতিনিয়ত চাপ বাড়ছে।
