রাজ্যে এসআইআর প্রক্রিয়ার জল্পনা শুরু হওয়া থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিহারের অভিজ্ঞতা সামনে রেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, বাংলায়ও কি একই প্রক্রিয়া চালু হবে? এই জল্পনা দীর্ঘদিন ধরে মানুষ এবং রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, বাংলায় তিনি এসআইআর করার অনুমতি দেবেন না। তিনি বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, রাজ্যের সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়া হবে এবং কোনও নাগরিককে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হবে না।
তবে রাজ্য প্রশাসন যখন এসআইআর প্রক্রিয়া চালু করল, তখন বিজেপি দলও এই বিষয়ে কটাক্ষ শুরু করে। তারা প্রশ্ন তুলতে থাকে, “মমতা তো বলেছিলেন, তিনি আটকাতে পারবেন। তাহলে কেন প্রক্রিয়া চালু হলো?” এই ধরনের রাজনৈতিক চাপের মধ্যে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এসআইআর নিয়ে বিজেপি-র চক্রান্তও তিনি ধরতে পেরেছেন এবং রাজ্যের মানুষকে আশ্বস্ত করেছেন যে, সরকার তাদের পাশে রয়েছে।
আজ মমতার প্রশাসনিক সভা মুর্শিদাবাদে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা। এই সভার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী জনগণকে পুনরায় আশ্বস্ত করেন যে, কারও নাম অনিচ্ছাকৃতভাবে বাদ পড়বে না। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, যদি কোনও নাগরিককে অনিচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশে পাঠানো হয়, সরকার তাকে ফিরিয়ে আনবে। তিনি বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি। কেউ অনুপস্থিত বা অনিরাপদ বোধ করবে না। আমাদের দায়িত্ব হলো প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।”
মমতার বক্তব্যে আরও একবার উঠে আসে তাঁর প্রশাসনিক নীতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করার প্রচেষ্টা। তিনি জানান, বিজেপি দল রাজনৈতিকভাবে এই পরিস্থিতি ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। তবে প্রশাসন পুরোপুরি সচেতন এবং রাজ্যের মানুষের সুরক্ষা ও স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। তিনি বলেন, “রাজ্যের নাগরিকরা বিভ্রান্ত হবেন না। সমস্ত অভিযোগ ও তথ্য যাচাই করার পরই কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারও অধিকার লঙ্ঘিত হবে না।”
এসআইআর প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তাতে সাধারণ মানুষও বেশ সচেতন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সভার মাধ্যমে জনগণকে নিশ্চিত করেছেন যে, প্রক্রিয়া হলেও এটি রাজনৈতিকভাবে বা অমানবিকভাবে ব্যবহার করা হবে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য হল প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা। এই প্রক্রিয়ায় কোনও ব্যক্তি অনুপস্থিত বা অসহায় বোধ করবে না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজকের সভায় আরও বলেন, রাজ্যে প্রশাসনিক দক্ষতা এবং সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা করা সরকারের মূল দায়িত্ব। বিজেপি-র কটাক্ষ ও রাজনীতি থাকা সত্ত্বেও, সরকার তাদের নীতি ও কর্মপদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করছে। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার জনগণের পাশে দাঁড়াবে এবং কারও ক্ষতি বা অন্যায় করা হবে না।
