চিঠি নয় ‘পুরোনো দাদাগিরি’ বলে মমতাকে কটাক্ষ শমীকের

shamik-bhattacharya-slams-mamata-banerjee-over-sir-letter

কলকাতা: SIR বন্ধ করতে বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় চিঠি লিখেছেন নির্বাচন কমিশনকে। এই চিঠিকে কেন্দ্র করেই উত্তাল হয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। বিজেপির রাজ্যসভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই চিঠিকেই কটাক্ষ করে লিখেছেন মমতার পুরোনো দাদাগিরি। তিনি আরও বলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “চিঠি নয়, এটা পুরোনো দাদাগিরি। উদ্বেগ নয়, কমিশনকে চাপে ফেলার পুরনো তৃণমূলি কায়দা।”

Advertisements

শমীকবাবুর কথায়, “ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগে এত আপত্তি কেন? ব্লক স্তরে হাজার হাজার দলীয় ক্যাডার বসিয়ে কাটমানি-দুর্নীতির হিসেব রাখতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার কমিশন স্বচ্ছতার জন্য নিরপেক্ষ লোক নিলেই এত আতঙ্ক? কারণ স্পষ্ট ভুয়ো ভোটার, ফেক ঠিকানা আর কারচুপি এবার ধরা পড়ে যাবে।”প্রাইভেট কমপ্লেক্সে বুথ করার প্রস্তাব নিয়েও তিনি তীব্র কটাক্ষ করেছেন। “সেখানে সিসিটিভি আছে, নিরাপত্তা আছে তৃণমূলের সন্ত্রাস ঢুকতে পারবে না বলেই এত ভয়?

   

বিজেপির মিশন বেঙ্গল ২০২৬ এ ছয় জেলার দায়িত্বে কারা?

যারা সরকারি স্কুলের শিক্ষককে মারতে পারে, বিরোধীদের ভয় দেখিয়ে পঞ্চায়েতে শত শত বুথ দখল করতে পারে, তারাই আজ ‘নিরপেক্ষতা’র বুলি আওড়াচ্ছে! ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’, ‘নিরপেক্ষতা’ এই শব্দগুলো তৃণমূলের মুখে মানায় না। সন্ত্রাস, ভয়, রক্ত এটাই তৃণমূলের প্রকৃত ভোটকৌশল।”শমীকবাবুর সবচেয়ে বড় অভিযোগ, এই চিঠির আসল উদ্দেশ্য একটাই কমিশনের হাত বেঁধে দেওয়া, ভুয়ো ভোটার বাঁচানো, বুথ দখলের রাস্তা খোলা রাখা।

Advertisements

শেষে তিনি লিখেছেন, “বাংলা আজ সব বুঝে গেছে। এবার বাংলার মানুষ ঠিক করেছে সন্ত্রাস নয়, চাই স্বচ্ছ গণতন্ত্র।”এই পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষাধিক শেয়ার, হাজার হাজার কমেন্ট। বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা একে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলে উল্লাস করছেন। অন্যদিকে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া। “এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র।” আজ দলের রাজ্য সম্পাদক জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “শমীকবাবু রাজ্যসভায় বসে বেতন নেন, কিন্তু বাংলার মানুষের ভোটাধিকার নিয়ে মিথ্যে কথা বলেন।

মুখ্যমন্ত্রী গণতন্ত্র বাঁচাতে চিঠি লিখেছেন, আর বিজেপি তাকে দাদাগিরি বলছে?”রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চিঠি এবং শমীকবাবুর কটাক্ষ ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মূল লড়াইয়ের ট্রেলার। একদিকে তৃণমূলের অভিযোগ লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষের নাম কাটা হচ্ছে, বিশেষ করে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায়। অন্যদিকে বিজেপির দাবি দীর্ঘদিনের ভুয়ো ভোটারদের পরিস্কার করা হচ্ছে।

সরিসা-পূর্বে ৭০০০-এর বেশি নাম কাটা, বজবজ-মহেশতলায় হাজার হাজার—এই সংখ্যাগুলো এখন রাজনৈতিক অস্ত্র।সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “দুই পক্ষই জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। কমিশনের উচিত স্বচ্ছভাবে কাজ করা, কারও চাপে নয়।” কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীও বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্রের কথা বলছেন, কিন্তু তাঁর দলের সন্ত্রাসের ইতিহাস ভোলার নয়।”