“মুখ্যমন্ত্রীর ১০মিনিটের জন্য আমরা ১৩দিন না খেয়ে বসে আছি”, মমতাকে ঝাঁঝালো বার্তা অনশনরত সায়ন্তনীর

কেন এখনও পর্যন্ত একবারও মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছে আসেননি? কেন মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিটের স্বাক্ষরের জন্য তাঁদের এতদিন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে? কেন মমতা সরকার তাদের ১০…

We have been sitting without food for 13 days for just 10 minutes with the Chief Minister," expressed the frustration of the protesting Sayantani.

কেন এখনও পর্যন্ত একবারও মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের কাছে আসেননি? কেন মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিটের স্বাক্ষরের জন্য তাঁদের এতদিন না খেয়ে থাকতে হচ্ছে? কেন মমতা সরকার তাদের ১০ দফা দাবি মেনে নিচ্ছেন না? এরকম হাজারো প্রশ্নের তীর শুক্রবার অনশন মঞ্চ থেকে এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে ছুঁড়ে দিলেন আমরণ অনশনে বসা জুনিয়র চিকিৎসকরা (Junior Doctors Hunger Strike)। ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের আমরণ অনশনের আজ ১৪ দিন।

গত ৫ অক্টোবর থেকে ধর্মতলায় অনশন শুরু করেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ইতিমধ্যে সেই অনশনমঞ্চে অনেক জুনিয়র চিকিৎসকই অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আবার অনেকে এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার এর মধ্যে শুক্রবার সেই অনশনমঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। আমরণ অনশনে প্রথম দিন থেকে থাকা জুনিয়র চিকিৎসক সায়ন্তনী ঘোষ আজ মুখ্যমন্ত্রীর দিকে নিশানা করে বলেছেন, “আমরা গত ১৩ দিন ধরে শুধু জল খেয়ে আছি।

   

ওআরএস বা গ্লুকোজও খাচ্ছি না। শুধু জল। কথা বলতেও আমাদের কষ্ট হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কি একবারের জন্যেও আমাদের কথা ভাবছেন না? আমরা দেখলাম, তিনি দুর্গাপুজোয় মেতে আছেন। কোথায় গেল ওঁর মাতৃসত্তা? আমাদের এখানে তো উনি একবারের জন্যেও এলেন না! আমাদের ১০ দফা দাবিতে স্বাক্ষর করে দিতে ১০ মিনিট লাগে। কেন উনি এত নিষ্ঠুর? আমাদের এখানে সাধারণ মানুষ রোজ এসেছেন, রোজ আসছেন। সকলে বলছেন, ‘তোমরা জয়ী হও’।

সকলে আমাদের সন্তানতুল্য বলছেন। কিন্তু একথা মুখ্যমন্ত্রীর কি একবারের জন্যেও মনে হচ্ছে না যে, ওদের শুকনো মুখের দিকে একবার তাকিয়ে দেখি? এই নিষ্ঠুরতা আমাদের নির্বাক করে দিচ্ছে।” সায়ন্তনী আরও বলেন, “অনেকেই আমাদের এখানে এসে জিজ্ঞেস করছেন, আর কতদিন না খেয়ে থাকব আমরা। একই প্রশ্ন আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে করতে চাই। আর কতদিন আমরা না খেয়ে থাকব, আপনি বলে দিন। প্রত্যেক ফোঁটা চোখের জলের হিসাব দিতে হবে।”

সেইসঙ্গে তিন দিন ধরে অনশনরত রুমেলিকা বলেন, “৭০ দিন ধরে আন্দোলন চলছে। ১৩ দিন ধরে চলছে অনশন। যা হচ্ছে, তা হওয়ার কথা ছিল না। আমাদের এখানে এভাবে না খেয়ে বসে থাকার কথা ছিল না। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীই দায়ী। অনেকে বলছেন, আমরা জেদ করছি। কিন্তু তা নয়। আমরা সরকারের ভুলের মাসুল দিচ্ছি। আমাদের যে সহযোদ্ধারা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, তাঁরা আপনাদের দুর্নীতি এবং ধাপ্পাবাজির মাসুল দিচ্ছেন।”

তবে এর পাশাপাশি আজকের সাংবাদিক বৈঠকে শনিবারে সোদপুর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ন্যায়যাত্রার প্রসঙ্গে সায়ন্তনী বলেছেন, “আমরা জানি, সাধারণ মানুষ ঠিক আসবেন। জনতার আশীর্বাদ আমাদের মাথায় আছে। আমরা নিশ্চয়ই জনতার সাড়া পাব। কিন্তু তাঁর সাড়া কি আমরা পাব? যাঁর সাড়া পেতে ১৩ দিন ধরে শুধু জল খেয়ে আমরা এখানে বসে আছি?”

সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষকে আন্দোলনের পাশে থাকার ডাক দিয়ে সায়ন্তনী বলেছেন, “আমাদের পাশে দাঁড়ান। মঞ্চের সামনে আসুন রবিবার। আমাদের মনোবল দিন। আমাদের শরীর ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে। কণ্ঠও ক্ষীণ হচ্ছে। আপনাদের কণ্ঠে আমরা শক্তি পাব। মুখ্যমন্ত্রীর ১০ মিনিটের জন্য আমরা ১৩ দিন এখানে না খেয়ে বসে আছি। আপনারা এসে দেখান, আমাদের সব দাবি ন্যায্য। আমাদের মনোবল এত সহজে ভাঙবে না। তবে আমরা ক্ষুব্ধ। খিদের জ্বালায় নয়। বিচারের দাবিতে। আমাদের মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। মানুষ আমাদের পাশে আছে। যাঁর পাশে থাকার কথা, তিনি নেই।”