নির্বাচন ভরাডুবির পর নীরবতা ভঙ্গ করে কি বার্তা তেজস্বীর

rjd-bihar-setback-endless-journey

পটনা, ১৬ নভেম্বর: বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর নীরবতা ভাঙল রাষ্ট্রীয় জনতাদল (RJD)। ভোটের ভয়াবহ ধাক্কার মধ্যেও RJD মন্তব্য করেছে “জনসেবার যাত্রা কখনো থামে না।” দলে স্বপ্ন ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের, কিন্তু বাস্তবতা অন্য ছবি এঁকে দিয়েছে।

Advertisements

শনিবার এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে RJD জানিয়েছে “জনসেবা একটি অবিরাম প্রক্রিয়া, একটি অন্তহীন যাত্রা। এতে ওঠানামা অনিবার্য। পরাজয়ে দুঃখ নেই, বিজয়ে অহংকার নেই,”। এই কথাগুলো শুধু দলের সাধারণ শ্রোতা এবং কর্মীদের উদ্দেশ্যেই নয় বরং জনসাধারণের জন্যও তা বলাই বাহুল্য।

   

পাকিস্তানে তীর্থযাত্রায় গিয়ে নিখোঁজ সরবজিত কৌর! তার পর কী হল?

RJD-র নেতা তেজস্বী যাদব, যিনি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন , এবারে মাত্র ২৫টি আসন পেতে সক্ষম হয়েছেন ২৪৩ আসনের বিধানসভায়। এটি দলের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ফল কেবল ২০১০ সালে তারা পেয়েছিল ২২টি আসন। ২০২০ সালের নির্বাচনে তারা ৭৫ আসন জিতে বিপুল প্রভাব দেখিয়েছিল; সেই লাফ এখন অনেকটা থেমে গিয়েছে। পরাজয় হলেও দলের ভোট ভাগে এক মজবুত পার্টি হিসেবে তারা এখনও দাঁড়িয়ে আছে তাদের ভোট শতাংশ ২৩ %, যা বিজেপির চেয়ে প্রায় ২.৯২ % বেশি এবং JDU-র চেয়ে ৩.৭৫ % বেশি।

তবে মহাজোট সংঘবদ্ধমতে তাদের জোট সঙ্গীরা একই দুঃস্বপ্নে দেড়িয়েছে। কংগ্রেস মাত্র ৬টি আসন, CPI(ML)L ২টি, CPI(M) ১টি এবং CPI একটিও আসন পায়নি। সর্বমোট মাত্র ৩৫টি আসন পেল মহাগঠবন্ধন, যা তাদের একটি বড় ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য হচ্ছে। দীর্ঘ দিনের বিরোধী ঐক্যবদ্ধতা আবারও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে।

Advertisements

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ফল শুধুমাত্র সংখ্যার লড়াই নয় — এটি একটি প্রতীকী বার্তা। RJD-র আত্মবিশ্লেষণ মূলত তাদের নীতি, যোগাযোগের ধরন এবং জনসংযোগের গুণগত দিক নিয়ে। দলের অভ্যন্তরীণ স্তরে এখন আলোচনা শুরু হয়েছে: কিভাবে তারা “জনসেবার’’ মন্ত্রকে প্রকৃত কর্মে রূপ দিতে পারে, এবং কীভাবে ভবিষ্যতের নির্বাচনে আরও যুক্তিসঙ্গত পরিকল্পনা গড়ে তুলতে পারে।

বিজয়ের মায়ায় বিভোর না হয়ে, RJD-র এই মনোভাব রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। RJD এর মতে “এই যাত্রা সহজ নয়,” “কিন্তু এই যাত্রী যারা দরিদ্রের, তাদের বিশ্বাসই আমাদের শক্তি।” এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নয়, বরং একটি দায়বদ্ধতা — যে সেবা, লড়াই এবং পরিবর্তনের পন্থা তাদের মূল স্বভাব।

এখন সময় তাদের জন্য সাধারণ মানুষের প্রতিচ্ছবি এবং বাস্তব জীবনের চাহিদার সঙ্গে আরও গভীর যোগাযোগ গড়ে তোলার। ভবিষ্যতের পথ তাদের কাছে কঠিন হলেও, তারা জানিয়েছেন তারা পিছিয়ে যাচ্ছে না। পরাজয়কে তারা শুধুমাত্র একটি বিরতিররূপে দেখছে, প্রলোভন নয়, পূর্বসতর্কতা নয়, বরং এক নতুন অধ্যায়ের প্রারম্ভ। বিহারের এই নির্বাচনী পরাজয় তাদের জন্য এক বার্তা: শক্তি কেবল আসনেই নয়, মানুষের মনেও থাকতে হবে। RJD-র “জনসেবার অন্তহীন যাত্রা” সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন যদিও পথের বাধা অনেক, তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।