বিশ্বকাপ জয়ী বাঙালি পরিবারকে তৃণমূলের হুমকি! মমতাকে কটাক্ষ বিজেপির

richa-ghosh-family-tmc-threat-siliguri-bjp-reaction

শিলিগুড়ি: রবিবার রাতে বিশ্ব জয় করে শিরোনামে দেশের মহিলা ক্রিকেট দল। এই দলেরই নির্ভরযোগ্য সদস্য উইকেট কিপার ব্যাটার রিচা ঘোষ। গতকাল বিশ্বকাপ জয়ের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রিচাকে অভিনন্দন জানান।

Advertisements

কিন্তু এই অভিনন্দন জানানোর পরেই সরব হন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন “আজ মুখ্যমন্ত্রী যাঁরা অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তাঁদের দলেরই এক অংশ কয়েক মাস আগেও হুমকি দিয়েছিল রিচার পরিবারকে। তখন কেউ পাশে দাঁড়ায়নি।”

   

যাত্রীদের বড় স্বস্তি আসছে? দ্রুত টিকিট ফেরতের নতুন নিয়ম আনছে ডিজিসিএ

রিচা ঘোষ, শিলিগুড়ির মেয়ে। বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে তাঁর সেমিফাইনালের অসাধারণ পারফরম্যান্সে দেশজুড়ে প্রশংসা ঝড় উঠেছিল। ফাইনালেও তার পারফরম্যান্স যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছে। তার পরিবর্তে মমতার এক্স হ্যান্ডেল বার্তা ঘিরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। ঘটনাটি শুরু হয় ১৯ জুলাই ২০২৫-এ। রিচার কাকা সুবিমল ঘোষ শিলিগুড়ির সুভাষ পল্লি (ওয়ার্ড নং ১৯)-এর এক ওষুধের দোকান মালিক ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা ধীমান বোসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগে বলা হয়, ধীমান ও তাঁর কর্মচারীরা নিয়মিত রাতের বেলা দোকানের ভিতর মদ্যপান করতেন, উচ্চস্বরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং এলাকায় যাওয়া-আসা করা মহিলাদের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করতেন। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে রিচার পরিবার। একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে সাহায্য চেয়েও কোনও সুরাহা পাননি বলে দাবি পরিবারের। অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের রাজনৈতিক প্রভাবের কারণেই পুলিশের ভূমিকা ছিল নীরব। অভিযোগ দায়েরের পরেও ধীমান বোসের বিরুদ্ধে কোনও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

Advertisements

পরবর্তীতে সিপিএম মহিলা সংগঠনের নেত্রী মৌসুমি হাজরার নেতৃত্বে এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল হয়। তাঁদের দাবি ছিল, রিচা ঘোষের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা। কিন্তু জুলাইয়ের পর থেকে আর কোনও সরকারি আপডেট প্রকাশ পায়নি। ফলে এই অভিযোগ এখনো অমীমাংসিত অবস্থায় রয়েছে।

এই পটভূমিতেই বিজেপি নতুন করে বিষয়টি সামনে এনেছে রিচার বিশ্বকাপজয়ের দিনেই। শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “রিচা ঘোষ আজ বিশ্বজয়ী, বাংলার প্রথম মহিলা ক্রিকেটার যিনি বিশ্বকাপে দেশের গর্ব বাড়িয়েছেন। অথচ তাঁর নিজের বাড়িতেই কয়েক মাস আগে রাজনৈতিক আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। তখন তৃণমূল চুপ ছিল, প্রশাসনও নীরব ছিল।” এখন মমতা ঘটে করে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

তবে রাজনৈতিক দোষারোপের মাঝেই নেটিজেনদের প্রশ্ন, যখন এক তরুণী দেশের হয়ে সাফল্যের ইতিহাস লিখছে, তখন তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা কেন প্রশাসনের কাছে উপেক্ষিত? খেলাধুলার এই উজ্জ্বল জয় কি আমাদের সমাজের অন্ধকার বাস্তবতাকে আড়াল করছে না? রিচা ঘোষ আজ লাখো তরুণীর অনুপ্রেরণা, কিন্তু তাঁর পরিবারের ভয় এবং অভিযোগ যেন আমাদের মনে করিয়ে দেয় বিজয়ের আলোতেও কখনও কখনও অন্ধকার থেকে যায়।