RJD এর গ্যাংস্টারকে হারিয়ে দানাপুরে জয়ী রাম কৃপাল

ram-kripal-yadav-wins-danapur-bihar-election-result

পাটনা, ১৪ নভেম্বর: দানাপুর বিধানসভা কেন্দ্রে যেন একটা রাজনৈতিক যুদ্ধ শেষ হল। বিজেপি প্রার্থী রাম কৃপাল যাদব বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে আরজেডি-র ‘গ্যাংস্টার’ ঋতলাল রাইকে ধরাশায়ী করলেন। ৪৮,৭৬২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জয়—এটা শুধু একটা আসনের জয় নয়, লালু প্রসাদ যাদবের পরিবারের জন্য ব্যক্তিগত পরাজয়। কারণ লালু নিজে এই আসনে একাধিক সভা করে ঋতলালকে জেতানোর জন্য ময়দানে নেমেছিলেন। কিন্তু জনগণ বললেন—‘না’।

Advertisements

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত ফলাফলে রাম কৃপাল পেয়েছেন ১,১৮,৪৫৬ ভোট, আর ঋতলাল যাদব মাত্র ৬৯,৬৯৪ ভোট। তৃতীয় স্থানে থাকা জেডিইউ-এর প্রার্থী পেয়েছেন ১২,৩৪১ ভোট। ২০২০-তেও রাম কৃপাল এই আসন থেকে জিতেছিলেন, তখন ব্যবধান ছিল ৩২,০০০-এর কাছাকাছি।

   

এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজারে।এই জয়ের পিছনে গল্পটা ব্যক্তিগত। রাম কৃপাল যাদব একসময় লালু পরিবারের অত্যন্ত কাছের লোক ছিলেন। ২০১৪-র আগে তিনি আরজেডি-র সাংসদ ছিলেন পাটলিপুত্র থেকে।

কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শূন্যপদ ঘোষণা, পরীক্ষা ছাড়াই হবে নির্বাচন

কিন্তু লালু মেয়ে মিসা ভারতীকে টিকিট দিতে গিয়ে রাম কৃপালকে সরিয়ে দেন। সেই অপমানের জ্বালা নিয়ে রাম কৃপাল বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০১৪, ২০১৯-এ লালুর মেয়েকেই হারান। এবার দানাপুরে লালুর ‘গ্যাংস্টার’ ঋতলালকে হারিয়ে যেন পুরনো প্রতিশোধ পূর্ণ করলেন।ঋতলাল রাই —বাহুবলী হিসেবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক খুন, চাঁদাবাজি, অপহরণের মামলা রয়েছে।

Advertisements

২০১৫-এও তিনি আরজেডি-র টিকিটে লড়েছিলেন, হেরেছিলেন। এবার লালু নিজে তিনটি সভা করেন দানাপুরে। একটি সভায় লালু বলেছিলেন, “ঋতলালকে জিতিয়ে দিন, আমি ওর জন্য সব করব।” কিন্তু ভোটাররা শুনলেন না।

রাম কৃপালের জয়ের পর দানাপুরের রাস্তায় উল্লাস। বিজেপি কর্মীরা মিষ্টি বিলি করছেন, ঢাক-ঢোল বাজছে। রাম কৃপাল বলেন, “এটা জনগণের জয়। লালুজি যতই চেষ্টা করুন, বিহার এখন উন্নয়ন চায়, গ্যাংস্টার রাজনীতি নয়। আমি মোদিজি আর নীতীশজির নেতৃত্বে দানাপুরকে মডেল শহর করব।” তিনি আরও বলেন, “লালুজির সভা দেখে মনে হয়েছিল চাপে আছেন। আজ জনগণ উত্তর দিয়েছে।”লালু পরিবারের জন্য এটা বড় ধাক্কা। তেজস্বী যাদব নিজের রঘুপুর আসনেও পিছিয়ে।

মিসা ভারতী পাটলিপুত্রে হেরেছেন। আর দানাপুরে লালুর ‘বিশ্বস্ত’ ঋতলালের পরাজয় যেন লালু যাদবের রাজনৈতিক প্রভাবের শেষ চিহ্ন মুছে দিল। আরজেডি-র এক নেতা বলেন, “লালুজি অসুস্থ থাকলেও ময়দানে নেমেছিলেন। কিন্তু জনগণ আর বাহুবলীদের চান না।”

দানাপুরের ভোটাররা বলছেন, “আমরা উন্নয়ন দেখেছি। রাম কৃপাল রাস্তা, বিদ্যুৎ, জল সব ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। ঋতলালের নাম শুনলেই ভয় লাগে।” এক মহিলা ভোটার বলেন, “লালুজির সভায় গিয়েছিলাম, কিন্তু ভোট দিয়েছি রাম কৃপালকে। আমরা শান্তি চাই।”