নির্বাচনের আগেই প্রশান্ত কিশোরের ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য বিজেপির

ram-kripal-yadav-slams-tejashwi-prashant-kishor-bihar-election-2025

পটনা: বিহারের রাজনৈতিক ময়দান ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে। নির্বাচনের আগে একের পর এক তির্যক মন্তব্যে যেন জ্বলে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। এবার বিজেপি নেতা ও দানাপুর বিধানসভা আসনের প্রার্থী রামকৃপাল যাদব সরাসরি নিশানা করলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব ও জন সুরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত কিশোরকে। তাঁর কটাক্ষ “প্রশান্ত কিশোর কেবল নিজের নাম আর খ্যাতির জন্য রাজনীতিতে নেমেছেন, ভোটে তিনি ভীষণভাবে ব্যর্থ হবেন। আর তেজস্বীর মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন কোনোদিনই পূরণ হবে না।”

Advertisements

শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে রামকৃপাল যাদব বলেন, “প্রশান্ত কিশোর কেবলমাত্র প্রচারের আলোয় থাকতে চান। তাঁর দলের কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই, জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। এই নির্বাচন প্রমাণ করবে শুধু পরিকল্পনা নয়, মানুষের আশীর্বাদ লাগে রাজনীতিতে টিকে থাকতে।”

   

তিনি আরও যোগ করেন, “বিহারের মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আবারও দেখতে চান। উন্নয়ন, অবকাঠামো, শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে মোদীজির নেতৃত্বে রাজ্য এগিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিহারের উন্নয়নই বিজেপি-জেডিইউ জোট সরকারের মূল পরিচয়।”

তিনি বলেন, “আরজেডি আমলে বিহার ছিল অরাজকতার রাজ্য। আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছিল, দুর্নীতি ছিল চরমে। তেজস্বী যাদব যাই বলুন না কেন, মানুষ লালু যুগের ভয়াবহ দিনগুলো ভুলে যায়নি।” তিনি কটাক্ষ করে বলেন, “তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তু জনগণ সেই স্বপ্নে সাড়া দেবে না। বিহারের মানুষ উন্নয়ন চায়, অন্ধ বিরোধিতা নয়। তাই তেজস্বীর ‘স্বপ্নযাত্রা’ এখানেই শেষ হবে।”

রামকৃপাল যাদব আরও দাবি করেন, বিহারের জনগণ বিজেপি ও এনডিএ-র কাজের প্রতি আস্থা রাখে। “নরেন্দ্র মোদী ও নিতীশ কুমার দু’জনের সমন্বিত নেতৃত্বে আজ গ্রামীণ সড়ক, জলবণ্টন, নারীশিক্ষা ও শিল্পোন্নয়ন প্রতিটি ক্ষেত্রে স্পষ্ট উন্নয়ন দৃশ্যমান।

Advertisements

আরজেডি শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আমরা তা বাস্তবায়ন করেছি।” প্রশান্ত কিশোরের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তিনি রাজনীতিতে নেমেছেন কৌশলী হিসেব থেকে নেতা হওয়ার প্রয়াসে। কিন্তু বাস্তবটা অন্যরকম। বিহারের মানুষ জানে, নেতার পরিচয় কাজ দিয়ে হয়, ক্যাম্পেইন দিয়ে নয়।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রামকৃপাল যাদবের এই তীব্র প্রতিক্রিয়া শুধু নির্বাচনী লড়াই নয়, বরং বিজেপির সংগঠিত আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। কারণ, এনডিএ এবার রাজ্যে তাদের উন্নয়নমূলক কাজকে হাতিয়ার করে বিরোধীদের “অবিশ্বাসযোগ্য বিকল্প” হিসেবে চিত্রিত করতে চাইছে।

অন্যদিকে, তেজস্বী যাদব সম্প্রতি রাঘোপুর আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন এবং বিজেপি-জেডিইউ সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, “বিহারে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি, কেবল প্রচারের রাজনীতি চলছে।” এই মন্তব্যই মূলত রামকৃপালের প্রতিক্রিয়ার সূত্রপাত।

এদিকে, জন সুরাজ পার্টির নেতা প্রশান্ত কিশোরও জানিয়েছেন, তিনি ‘নতুন বিহার’ গড়ার মিশনে নেমেছেন। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে তাঁর সংগঠন এখনও তৃণমূল পর্যায়ে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলত, রামকৃপাল যাদবের বক্তব্যে যে আত্মবিশ্বাস ঝরে পড়ছে, তা অকারণ নয়। নির্বাচনের আগে এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, বিজেপি নেতৃত্ব রাজ্যের মাটিতে নিজেদের শক্ত অবস্থান নিয়ে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।