গুয়াহাটি, নভেম্বর ৪: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা রাজেন গোহাঁই এবার বিজেপি ছেড়ে অসম জাতীয় পরিষদে (এ জে পি) যোগ দিতে চলেছেন। কয়েকদিন আগেই রাজ্য বিজেপির কার্যপ্রণালী নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গোহাঁইয়ের এ জে পি-তে যোগদান এখন প্রায় চূড়ান্ত। আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটিই এখন বাকি। এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, “সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেছে, এখন কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণা বাকি। খুব শিগগিরই গোহাঁইয়ের যোগদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।”
বাড়ি বন্ধ, ভোটার আতঙ্কে পাশে দিদির হেল্পডেস্ক
গত ৯ অক্টোবর রাজেন গোহাঁই বিজেপির সমস্ত সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে তিনি অভিযোগ করেন যে, দলে প্রবীণ নেতাদের জন্য এক “অপ্রীতিকর ও অস্বস্তিকর পরিবেশ” তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, তাঁর পদত্যাগের দিনই ডিব্রুগড়ে বিজেপির এক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী বৈঠক চলছিল, যা দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও অসন্তোষকে নতুন করে প্রকাশ্যে আনে।
রাজেন গোহাঁই দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য বিজেপির নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক ধারা নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। তাঁর মতে, প্রবীণ ও ত্যাগী নেতাদের মতামতকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, যা দলের আদর্শের পরিপন্থী।
গোহাঁইয়ের পদত্যাগের পর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “অসমে বিজেপির ভিত্তি মজবুত করতে রাজেন গোহাঁই অমূল্য অবদান রেখেছেন, আমরা তাঁর অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।”
অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ শইকীয়া মন্তব্য করেন, “দলে ব্যক্তিগত ক্ষোভ বা অভিমান কখনও দলের সামষ্টিক লক্ষ্যের উপরে থাকা উচিত নয়।”
রাজেন গোহাঁই ১৯৯১ সালে বিজেপিতে যোগ দেন এবং দলের রাজ্য সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। নাগাঁও লোকসভা কেন্দ্র থেকে তিনি টানা চারবার সাংসদ নির্বাচিত হন এবং নরেন্দ্র মোদীর প্রথম মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলান।
অসম রাজনীতির এই অভিজ্ঞ নেতার আঞ্চলিক দল এ জে পি-তে যোগদানকে রাজনৈতিক মহল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি রাজ্য বিজেপির পুরনো নেতৃত্বের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের এক স্পষ্ট বার্তা যা আগামী নির্বাচনী সমীকরণে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।


