রাজস্থান: রাজস্থানের ডুঙ্গরপুর জেলার এক অভূতপূর্ব ঘটনায়, খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এমন ১১৫ জন আদিবাসী গ্রামবাসী আবার ফিরে এসেছেন তাঁদের মূল সনাতন ধর্মে। এই ঘটনা শুধু ধর্মীয় পরিবর্তনের নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণের প্রতীক হয়ে উঠেছে। বিজেপি বিধায়ক ভবনা বোহরা এই গ্রামবাসীদের স্বাগত জানিয়ে তাঁদের পা ধুয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “মর্যাদা পুনরুদ্ধার হয়েছে, শিকড় ফিরে পাওয়া গেছে, পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে।” এই কথাগুলো শুধু শব্দ নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আত্মসম্মানের প্রতিধ্বনি।ঘটনাটি ঘটেছে ডুঙ্গরপুরের বিভিন্ন গ্রামে, যেখানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন।
মধ্যপ্রদেশ-মন্ত্রীর মন্তব্য তুঙ্গে বিতর্ক: কুণালের তোপ, “ক্ষমা চাক বিজেপি”!
অনেকে খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন বিভিন্ন সামাজিক-অর্থনৈতিক চাপে বা মিশনারি কার্যকলাপের প্রভাবে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে, স্থানীয় হিন্দু সংগঠনগুলোর উদ্যোগে ‘ঘর ওয়াপসি’ কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা আবার সনাতন ধর্মের ছায়ায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই কর্মসূচি শুধু ধর্মীয় নয়, বরং আদিবাসীদের মধ্যে তাঁদের প্রাচীন সংস্কৃতি, রীতিনীতি এবং পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকারকে জাগরিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়েছে।
বিধায়ক ভবনা বোহরা, যিনি ডুঙ্গরপুরের গরহি আসন থেকে নির্বাচিত, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি নিজে হাতে গ্রামবাসীদের পা ধুয়ে দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানান। এই অঙ্গভঙ্গি ভারতীয় সংস্কৃতিতে অতিথি সৎকারের একটি প্রাচীন প্রথা, যা শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সম্মানের প্রতীক। বোহরা বলেন, “এই ভাই-বোনেরা আমাদের পরিবারের সদস্য। তাঁরা বিপথে গিয়েছিলেন, কিন্তু এখন নিজেদের শিকড়ে ফিরে এসেছেন।
এটি একটি আনন্দের মুহূর্ত, যা আমাদের সমাজকে আরও শক্তিশালী করবে।” তাঁর এই কাজ দেখে উপস্থিত সকলে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। অনেক গ্রামবাসী চোখের জল ফেলতে ফেলতে বলেন, “আমরা আমাদের হারানো পরিচয় ফিরে পেয়েছি।” এই ১১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ যুবক, যুবতী, বৃদ্ধ এবং শিশু। তাঁদের অনেকেই জানিয়েছেন যে, খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের পরেও তাঁদের মনে একটা শূন্যতা ছিল। সনাতন ধর্মের পূজা-অর্চনা, উৎসব এবং সম্প্রদায়ের বন্ধন তাঁদের টানছিল।
একজন গ্রামবাসী বলেন, “আমরা মিশনারিদের কথায় ধর্ম বদলেছিলাম, কিন্তু এখন বুঝতে পেরেছি যে আমাদের আসল ঘর এখানে। হিন্দু ধর্ম আমাদের শান্তি দেয়, আমাদের পূর্বপুরুষদের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।” আরেকজন মহিলা, লীলা বেন, বলেন, “আমাদের সন্তানরা এখন দীপাবলি, হোলি উদযাপন করবে, আমাদের গ্রামের মন্দিরে যাবে। এটি আমাদের জন্য নতুন জীবন।”


