রাহুলগান্ধী বিতর্কে নয়া রহস্য ফাঁস করে বিতর্কিত দশরথ পুত্র

rahul-gandhi-controversy-dashrath-manjhi-bihar

গয়া: বাংলাদেশের সাথে যুক্ত নয়, কিন্তু ভারতের বিহারের এই ছোট্ট গ্রাম গেহলোয়ারের নাম শুনলেই মনে পড়ে দশরথ মাঝি-র অসাধারণ গল্প। ‘পাহাড়পুরুষ’ নামে পরিচিত এই লোকটি একা হাতুড়ি আর ছেনি নিয়ে ২২ বছর ধরে পাহাড় কেটে গ্রামের মানুষের জন্য ১১০ ফুট লম্বা, ৯ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরি করেছিলেন। তার সেই ত্যাগের গল্প আজও অনুপ্রেরণা ছড়ায়।

Advertisements

কিন্তু আজ তার ছেলে ভগীরথ মাঝি-র মুখে শুধু কৃতজ্ঞতা নয়, একটা গভীর হতাশা আর রাজনৈতিক ছলনার অভিযোগ। রাহুল গান্ধীর সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে যে ন্যারেটিভ গত কয়েক মাস ধরে চলছিল সেটা এখন নিজেরাই ভেঙে পড়ছে। ভগীরথের স্পষ্টীকরণে প্রকাশ পেল, রাহুল কখনো ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেননি; শুধু গ্রামে এসে খাটে বসে ডাল-ভাত খেয়েছিলেন, নারকেলের জল খেয়েছিলেন।

   

সরকারি সতর্কবার্তা! ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যান-আধার লিঙ্ক না করলেই বিপদ!

এই ঘটনা রাহুল গান্ধীর জন্য আরেকটা লজ্জার মুহূর্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে, বিশেষ করে বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।চলুন, ঘটনার সূত্রপাত থেকে বলি। গত জুলাই মাসে রাহুল গান্ধী বিহারের গয়া জেলার গেহলোয়ার গ্রামে আসেন। এটা ছিল তার ‘সংবিধান রক্ষা’ সম্মেলনের অংশ। সেখানে ভগীরথের সাথে দেখা হয়। ভগীরথ তার বাবার তৈরি সেই বিখ্যাত রাস্তা দেখান, যা ৫৫ কিলোমিটারের পথকে ১৫ কিলোমিটারে রূপান্তরিত করেছে।

রাহুল গ্রামের বাচ্চাদের সাথে কথা বলেন, জিজ্ঞাসা করেন তারা পড়াশোনা করে কি না। তারপর ভগীরথের ঘরে যান—যেটা ছিল একটা কাঁচা মাটির ঘর, ইন্দিরা আবাস যোজনার অধীনে পাওয়া একটা অসম্পূর্ণ স্থাপনা। সেখানে তারা দুজনে খাটে বসে নারকেলের জল খান, সাধারণ ডাল-ভাত খান। কোনো বড় বক্তৃতা নয়, কোনো ফটোসেশন নয়। শুধু একটা সাধারণ মানুষের মতো সাধারণ সময়।

Advertisements

কংগ্রেস নেতারা পরে এই দৃশ্যকে প্রচার করে বলেছিলেন, রাহুল ‘দরিদ্রের নেতা’, যিনি চুপচাপ সাহায্য করেন। কয়েকদিন পরই গ্রামে কারিগররা এসে ঘরটাকে পাকা করে তোলেন চারটে ঘর, ছাদ, প্লাস্টারিং সব। ভগীরথ তখন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন: “রাহুলজি কখনো প্রতিশ্রুতি দেননি, তবু ঘর বানিয়ে দিলেন। অন্যরা এসে ফটো তুলে চলে যায়।”কিন্তু এই মিষ্টি গল্পটা এখানে শেষ হয়নি।

আসল টুইস্ট আসে অক্টোবর মাসে, যখন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের টিকিট বিতরণ শুরু হয়। ভগীরথ মাঝি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন, বারাচট্টি আসন থেকে লড়তে চেয়েছিলেন। তার মতে, রাহুল গান্ধী নিজে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—গ্রামে এসে, খাটে বসে। “রাহুলজি বলেছিলেন, টিকিট দেব। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম কারণ তিনি ঘরে এসেছিলেন,” বলেছেন ভগীরথ এক সাক্ষাৎকারে।

তিনি চারদিন ধরে দিল্লিতে অপেক্ষা করেন, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সাথে দেখা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকিট যায় অন্য প্রার্থী তনুশ্রী মাঝি-র কাছে। এই ঘটনায় ভগীরথের রাগ ফেটে পড়ে। তিনি বলেন, “আমার রাহুল গান্ধির প্রতি বিশ্বাস ভেঙে গেছে। এটা রাজনৈতিক ছলনা। ঘর বানিয়ে ভোট চাওয়া, তারপর ভুলে যাওয়া।” এই অভিযোগে কংগ্রেস এখনও কোনো সরকারি বক্তব্য দেননি, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।