প্রশান্ত কিশোরের উদ্যোগ মরে যায়নি, রাজনীতিতে ফিরছে জন সুরাজের ছন্দ!

Prashant Kishor’s Jan Suraaj Isn’t Fading — It’s Taking Shape

ভারতের সবচেয়ে জটিল রাজনৈতিক রাজ্যগুলির মধ্যে বিহার অন্যতম। এখানে রাজনৈতিক সমীকরণ যেমন বহুস্তরীয়, তেমনই প্রতিষ্ঠিত দল ও অভিজ্ঞ নেতাদের দাপট রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন কোনও রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশই অনেকের কাছে অসম্ভব বলে মনে হয়। এই কঠিন পথেই পা বাড়িয়েছিলেন রাজনৈতিক কৌশলবিদ থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) । আর তাঁর দল জন সুরাজ নিয়ে অনেকে যতই সমালোচনা করুন না কেন, বিহার বিধানসভা নির্বাচনে একটি আসনও না জিতলেও দলটির ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই ‘রাজনৈতিক মৃত্যু-ঘোষণা’ করা বাস্তবতার সাথে যায় না। বরং, যা ঘটেছে তাকে বলা যায়—আগুনের পরীক্ষায় জন সুরাজের রাজনৈতিক জন্ম।

Advertisements

প্রথম নির্বাচনে কোনও নতুন দলের পক্ষে আসন জেতা কঠিন। কিন্তু ভোট শেয়ার—সেটাই বলে দেয় দলের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা। আর এখানেই জন সুরাজ চমকে দিয়েছে। দলটি প্রথম বারের মতো লড়াই করে পেয়েছে ৩.৪% ভোট শেয়ার**। সংখ্যাটি শুনতে হয়তো ছোট মনে হতে পারে, কিন্তু বিহারের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

   

বিএসপি, যারা একটি আসন জিতেছে

এআইএমআইএম, যারা পাঁচটি আসন পেয়েছে

এমনকি বামপন্থী তিনটি দল মিলেও জন সুরাজের ভোটের সমান জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।

Advertisements

এ থেকেই বোঝা যায়, আসন না পেলেও জন সুরাজ ভোটারের মনে জায়গা করে নিতে শুরু করেছে। প্রশান্ত কিশোর শুরু থেকেই জায়গা করে নিতে চেয়েছেন নীচু তলার মানুষের মাঝে। তাঁর প্রচার ছিল নদী, মাটি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান—এই সব বাস্তব সমস্যা কেন্দ্রিক। বিহারের সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের আক্ষেপগুলিকে সামনে এনে যেভাবে জন সুরাজ কাজ করেছে, তা ভোটে প্রতিফলন না পেলেও মানুষের মনে প্রভাব ফেলেছে।

এটি স্পষ্ট যে, দলটি ফেসবুক পোস্ট, টেলিভিশন বিজ্ঞাপন বা বড় বড় সভা নয়—বরং ঘরোয়া আলোচনায়, গ্রাম-বসতির জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে বিশ্বাস করে। বিহারের মতো রাজ্যে যেখানে বয়স্ক ভোটারদের সংখ্যাই বেশি এবং তাদের কাছে পৌঁছাতে হলে ‘ডোর-টু-ডোর’ লড়াই জরুরি, সেখানে প্রশান্ত কিশোরের এই স্ট্র্যাটেজি দীর্ঘমেয়াদে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করছে।