বেকারত্বকে হাতিয়ার করে ‘ক্লিন ইমেজ’ ট্রাম্প কার্ড খেললেন PK!

prashant-kishor-jan-suraaj-51-candidates-list-bihar-Assembly-elections-2025-unemployment-job-promises-tejashwi-yadav

বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন (Bihar Assembly Elections 2025) ঘিরে রাজ্যের রাজনীতি এক নতুন মোড়ে পৌঁছেছে। দুই দফার এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৬ ও ১১ নভেম্বর, আর ফলাফল ঘোষণা হবে ১৪ নভেম্বর। এর আগেই বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানকে কেন্দ্র করে ভোট-রাজনীতিতে ছড়িয়েছে প্রবল উত্তাপ।

Advertisements

প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল রাজনৈতিক কৌশলবিদ থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা প্রশান্ত কিশোরের নতুন দল জন সুরাজ পার্টি। এক ঝাঁক পরিচিত রাজনৈতিক মুখের বদলে এই দলে জায়গা পেয়েছেন সমাজের নানা শ্রেণির স্বীকৃত ও প্রভাবশালী পেশাজীবীরা। তালিকায় রয়েছেন বিশিষ্ট গণিতজ্ঞ, অভিজ্ঞ আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রাক্তন আমলা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার।

   

সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছেন গণিতজ্ঞ কে সি সিনহা, যাঁর লেখা বই বিহারসহ ভারতের বিভিন্ন স্কুলে পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হয়। পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য এই কৃতী শিক্ষক এবার প্রার্থী হয়েছেন পাটনার কুমহারার আসন থেকে। মুজাফ্ফরপুর আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন চিকিৎসক অমিত কুমার দাস, যিনি পাটনা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তনী। তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। তাঁর নিজস্ব একটি হাসপাতালও রয়েছে ওই এলাকায়।

অন্যদিকে, আইনজীবী হিসেবে পরিচিত ওয়াই বি গিরি, যিনি অতীতে বিহার সরকারের অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন এবং কেন্দ্রের পক্ষে পাটনা হাই কোর্টে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্বও সামলেছেন, তিনি এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মানঝি আসন থেকে।

প্রশান্ত কিশোর জানিয়েছেন, “আমরা চাই এমন প্রার্থী যাঁরা সমাজে পরিচিত, গ্রহণযোগ্য এবং যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই।” প্রথম তালিকায় প্রায় ১৬ শতাংশ মুসলিম এবং ১৭ শতাংশ অতি পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রার্থী করা হয়েছে।

Advertisements

এই অবস্থায়, রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে বৃহস্পতিবার তেজস্বী যাদব দিয়েছেন বড় প্রতিশ্রুতি। তিনি ঘোষণা করেছেন, বিহারে আরজেডি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি পরিবারে অন্তত একজনকে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, “উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন বেকারত্ব কমবে। আমাদের লক্ষ্য স্পষ্ট, প্রতিটি পরিবারে একজন যেন স্থায়ী কাজ পান।” এই প্রতিশ্রুতির জবাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও ঘোষণা করেছেন, আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবে তাঁদের সরকার।

বর্তমানে বিহারে মোট ভোটার সংখ্যা ৭ কোটি ৪১ লক্ষ। বিশ্লেষকদের মতে, এবার ভোটের মূল ইস্যু হতে চলেছে বেকারত্ব ও কর্মসংস্থান। এই প্রেক্ষাপটে তেজস্বীর ঘোষণাকে বিরোধী জোটের বড় চাল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

বিহারে এবারের ভোটে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, প্রচলিত রাজনীতির বাইরে গিয়ে সমাজের নির্ভরযোগ্য মানুষদের তুলে আনতে চাইছে একদল। অন্যদিকে প্রতিশ্রুতির লড়াইয়ে নামছে আরেক পক্ষ। ভোটের এই মরসুমে কে বাজিমাত করবে? সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে এখনই স্পষ্ট, বিহার ভোটে এইবার মূল লড়াই হবে আস্থা বনাম প্রতিশ্রুতির মধ্যে।