পটনা: বিহারের রাজনীতিতে ফের চর্চার কেন্দ্রে প্রশান্ত কিশোর (PK)। নিজের রাজনৈতিক দল ‘জন সুরাজ’ গঠনের পর থেকেই তিনি রাজ্য জুড়ে সক্রিয়ভাবে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এক ঘোষণায় তিনি জানিয়েছেন, তিনি আসন্ন বিধানসভা বা লোকসভা কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। এই সিদ্ধান্ত নিয়েই এবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন কংগ্রেস নেতা এবং ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
বাঘেল সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন পিকে-র রাজনীতি নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, “তিন বছর ধরে তিনি মাটিতে ঘুরছেন, সভা করছেন, প্রচার করছেন। এখন বলছেন নির্বাচনে লড়বেন না! তাহলে এতদিন তিনি আসলে কী করছিলেন? কে তাঁকে বলল লড়তে বা না লড়তে?” বাঘেলের কটাক্ষ, “বিহারের মানুষ রাজনীতিতে সিদ্ধহস্ত। তাদের রক্তে রাজনীতি মিশে আছে। তাই তারা খুব ভালোই বুঝে নিতে পারছে, প্রশান্ত কিশোর আসলে কী করতে চাইছেন।”
আজ দেশীয় যুদ্ধবিমান তেজসের জন্য একটি বড় দিন, মার্ক-১এ ভেরিয়েন্টের প্রথম উড়ান
প্রসঙ্গত, প্রশান্ত কিশোর দেশের অন্যতম পরিচিত নির্বাচনী কৌশলবিদ। নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নিতীশ কুমার, জগনমোহন রেড্ডি একাধিক নেতার নির্বাচনী প্রচার কৌশল তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু পরে রাজনীতি নিয়ে নিজের ভিন্ন ভাবনা থেকে গড়ে তোলেন ‘জন সুরাজ’ আন্দোলন। দাবি করেন, রাজনীতিকে স্বচ্ছ ও জনমুখী করতে চান তিনি।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পিকে-র নির্বাচনে না নামার সিদ্ধান্ত আসলে এক ধরনের কৌশল। তিনি সরাসরি প্রার্থী না হলেও সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চাইছেন। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছেন, প্রশান্ত কিশোর নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করতে পারছেন না। কখনও বিজেপির বিরোধিতা, কখনও তৃণমূল বা কংগ্রেসের কাছাকাছি এই দ্বিধাই তাঁকে সমস্যায় ফেলছে।
বাঘেলের মন্তব্যে পিকে-র শিবিরে এখন চাপা প্রতিক্রিয়া। জন সুরাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “আমরা রাজনীতিতে নতুন সংস্কৃতি আনতে চাই। পিকে-র লক্ষ্য ব্যক্তিগত নয়, সমষ্টিগত।” তবে বিরোধী শিবিরে গুঞ্জন, প্রশান্ত কিশোর এখন জনপ্রিয়তার মাপকাঠি যাচাই করছেন মানুষ তাঁকে কতটা সমর্থন দিচ্ছে, সেটাই দেখছেন নির্বাচনে নামার আগে।
বিহারের রাজনৈতিক আবহে এই মন্তব্যে ফের সরগরম পরিস্থিতি। একদিকে প্রশান্ত কিশোরের প্রচারে নতুন গতি, অন্যদিকে কংগ্রেস নেতার কটাক্ষে বিতর্কের আঁচ ছড়াচ্ছে জাতীয় রাজনীতিতেও। আগামী নির্বাচনের আগে এই দ্বন্দ্বই হয়তো আরও নতুন সমীকরণ তৈরি করবে।