‘অ-হিন্দু’দের বাড়ি যাওয়া নিয়ে ফতোয়া জারি বিজেপি নেত্রীর

pragya-thakur-controversial-statement-bhopal

ভোপাল: মধ্যপ্রদেশের রাজনৈতিক মহলে আবারও উত্তেজনা। এবারের কেন্দ্রবিন্দু প্রাক্তন ভোপাল সাংসদ প্রগ্যা সিংহ ঠাকুরের বিতর্কিত বক্তব্য। এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিনি অভিভাবকদের উপদেশ দিয়েছেন যে, তাদের মেয়েরা যদি অমত সত্ত্বেও ‘অ-হিন্দু’দের বাড়িতে যায়, তাহলে তাদের পা ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছেন। এই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেস নেতারা বিজেপিকে অভিযুক্ত করেছেন যে, বিজেপি সমাজে ঘৃণা ছড়াচ্ছে।

Advertisements

প্রগ্যার এই কথা শুধু নারীদের নিরাপত্তার নামে হিংসার প্রচার নয়, এটি ধর্মীয় বিভেদের আগুন জ্বালিয়ে তুলেছে, যা মধ্যপ্রদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে।ঘটনাটি ঘটেছে এই মাসের শুরুতে ভোপালে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে।

১৩ দিনের অভিযানে বন্যার জলে ভেসে যাওয়া উদ্ধার ১০ গণ্ডার

প্রগ্যা, যিনি বিজেপির প্রখ্যাত হিন্দুত্ববাদী নেত্রী হিসেবে পরিচিত, সেখানে অভিভাবকদের মনে বলশালী করার কথা বলছিলেন। তিনি বলেছেন, “মনকে শক্তিশালী করুন, এমন শক্তিশালী যাতে আমাদের মেয়ে আমাদের কথা না মানলে, যদি সে অ-হিন্দুর বাড়িতে যায়, তাহলে তার পা ভাঙার কথা চিন্তা করে কোনো পথ ছাড়বেন না।

যারা মূল্যবোধ মানে না, অভিভাবকের কথা শোনে না, তাদের শাস্তি দিতে হবে। সন্তানের কল্যাণের জন্য মারধর করতে হলে পিছপা হবেন না। অভিভাবকের এমন কাজ সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য ভালো; এতে তারা খণ্ডিত হয়ে মরতে দেয় না।” ভিডিওতে তিনি আরও যোগ করেছেন, “যে মেয়েরা মূল্যবোধ না মানে, অভিভাবকের কথা না শোনে, বড়দের সম্মান করে না এবং বাড়ি থেকে পালাতে প্রস্তুত… তাদের প্রতি সতর্ক থাকুন।

Advertisements

তাদের বাড়ি থেকে বের হতে দেবেন না, মারধর করে, বোঝানো করে, শান্ত করে, ভালোবাসা দিয়ে বা তিরস্কার করে আটকান।” এই কথাগুলো শুনে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগছে এ কি সত্যিই নিরাপত্তার কথা, নাকি হিংসা ও বিভেদের প্রচার?

প্রগ্যা ঠাকুরের এই বক্তব্য তার অতীতের বিতর্কিত ঘোষণার সাথে যুক্ত। তিনি ২০০৮ সালের মালেগাঁও বোমা হামলা মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন। সাম্প্রতিককালে দুর্গা বাহিনীর এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, মন্দিরের কাছে ‘প্রসাদ’ বিক্রি করা অ-হিন্দুদের ‘উত্তম মধ্যম মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে।

সেখানে তিনি ‘লাভ জিহাদ’-এর কথা তুলে হিন্দু মেয়েদের মুসলিম পুরুষদের থেকে সতর্ক থাকার উপদেশ দিয়েছিলেন। এছাড়া, কোভিড-১৯-এর সময় গো-মূত্র পানের প্রচার করেছিলেন। এই ঘটনাগুলো প্রতিবারই তাঁকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে, কিন্তু বিজেপির নেতৃত্ব প্রায়শই এগুলোকে ‘ধর্মীয় সংরক্ষণের’ অংশ বলে যুক্তি দিয়েছে।

মধ্যপ্রদেশের বিরোধী দলের নেতা উমাঙ্গ সিংহার বলেছেন, “বিজেপি অন্যদের হিন্দু-মুসলিম রাজনীতির অভিযোগ করে, কিন্তু নিজেদের নেতারা প্রকাশ্যে এমন উসকানি দেয়। প্রগ্যা বারবার অপরাধ করছেন। বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি, নিয়োগ কেলেঙ্কারির মধ্যে এসব দিয়ে জনগণের দৃষ্টি সরানো হচ্ছে।”