নয়াদিল্লি: গাজায় দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ইসরায়েল ও হামাসের (India Politics) মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উল্লাসের ছায়া পড়লেও, ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে এই ইস্যু নিয়ে তৈরী হয়েছে নয়া বিতর্ক। অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM )-এর প্রধান ও হায়দ্রাবাদের সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি সংবামাধ্যমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে বলেছেন, এই চুক্তি ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো সত্যিকারের ন্যায়বিচার নয়।
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, গণহত্যার অপরাধীরা কি শাস্তি পাবেন, নাকি এটা শুধু একটা রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের মতো চলতে থাকবে? এই বক্তব্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশংসা নিয়েও তীব্র প্রশ্ন তোলে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শুর্ম এল-শেখে আলোচনার মাধ্যমে ইসরায়েল ও হামাস প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
রাজ্য নির্বাচন আধিকারিককে হুমকি? মমতার মন্তব্যের ভিডিয়ো চাইল কমিশন
এতে হামাসের কাছে আটক ৪৮ জন জিম্মি মুক্তি এবং ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ২৫০ জন ফিলিস্তিনি কয়েদীর মুক্তির কথা বলা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা থেকে আংশিক প্রত্যাহার করবে এবং মানবিক সাহায্যের প্রবাহ বাড়বে। কিন্তু ওয়াইসির মতে, এতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ কী হবে? তিনি বলেন, “গাজায় ৬৫,০০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এটা স্পষ্ট গণহত্যা।
কিন্তু বলুন তো, রক্তমাখা হাতের টনি ব্লেয়ার এতে কী করবেন? যে বোর্ড গঠিত হবে, তাতে ট্রাম্প কী করবেন? ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ কোথায়? ইসরায়েলি সেনাবাহিনী যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তারা কোথায় থামবে? ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের কী হবে? এটা যেন একটা রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের মতো চলছে। কিন্তু গণহত্যার অপরাধীরা? তারা শাস্তি পাবে কি না?”
ওয়াইসির এই কথাগুলো শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির সমালোচনা নয়, ভারতের বিদেশ নীতির উপরও আঘাত। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “সবচেয়ে উদ্বেগজনক যে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী কী করে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের প্রশংসা করছেন? আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছ তাকে কেন প্রশংসা? এটা একটা সম্পূর্ণ গণহত্যাকারী শাসন।
বিজেপি বারবার বলছে ইসরায়েল আমাদের সাহায্য করে, কিন্তু কেউ সাহায্য করে না। আমরা টাকা দিই; কিছু ফ্রিতে হয় না।” এই কথায় ওয়াইসি ভারত-ইসরায়েল সম্পর্কের অর্থনৈতিক দিকটিও তুলে ধরেছেন, যা দেশের অস্ত্র আমদানি ও প্রযুক্তি চুক্তির প্রসঙ্গে সংবেদনশীল। ভারতে এই বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহল উত্তপ্ত। বিজেপি স্বভাবতই ওআইসির এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে আক্রমণ শানিয়েছে এবং ওয়াইসির মন্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে।