জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে ফের শুরু ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ বিতর্ক

omar-abdullah-slams-sajad-lone-rajya-sabha-fixed-match-kashmir-2025

শ্রীনগর: জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে ফের শুরু হয়েছে ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ বিতর্ক। রাজ্যসভার নির্বাচনে ন্যাশনাল কনফারেন্স (NC) ও বিজেপির মধ্যে গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্স-এর সভাপতি সাজাদ লোন। তবে এবার তাঁর সেই মন্তব্যের পাল্টা দিতে দ্বিধা করেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও এনসি নেতা ওমর আবদুল্লাহ।

Advertisements

শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওমর বলেন, “যিনি নিজে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই রাজি ছিলেন না, তাঁর এসব মন্তব্য করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। প্রথমে উনি এটা ব্যাখ্যা করুন, কোন বাধ্যবাধকতার কারণে উনি বিজেপিকে সাহায্য করলেন?”

   

জগদ্ধাত্রী পুজোয় চন্দননগরগামী যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত ট্রেন পরিষেবা, জেনে নিন সময়সূচি

ওমরের বক্তব্যে ক্ষোভের সুর স্পষ্ট। তিনি আরও বলেন, “যদি উনি সত্যিই ম্যাচ-ফিক্সিং আটকাতে চাইতেন, তাহলে অন্তত নিজের ভোটটা দিতেন। কিন্তু সেটা না করে এখন বিজেপি-বিরোধী সাজার চেষ্টা করছেন। হান্ডওয়ারার মানুষ ওনাকে চুপ করে বসে থাকার জন্য নির্বাচিত করেননি। এখন সময় এসেছে উনি স্পষ্ট করে জানান, তিনি আসলে কার পাশে বিজেপির না গণতন্ত্রের।”

এই বিতর্কের সূত্রপাত কয়েক দিন আগেই, যখন সাজাদ লোন রাজ্যসভার নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে “একটি নির্ধারিত ম্যাচ” বলে আখ্যা দেন। তাঁর দাবি ছিল, ন্যাশনাল কনফারেন্স (NC) ও বিজেপির মধ্যে গোপনে সমঝোতা হয়েছে, যাতে নির্দিষ্ট প্রার্থীকে জিতিয়ে দেওয়া যায়। তবে লোন নিজে ভোটদানে বিরত থাকেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে “তাহলে তিনিও কি সেই ফিক্সিংয়ের অংশ?”

Advertisements

ওমর আবদুল্লাহ এই প্রসঙ্গে বলেন, “যখন নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছিল, তখনই আমি বলেছিলাম যারা ভোট দেবে না বা অংশ নেবে না, তারা সরাসরি বিজেপিকে সাহায্য করবে। আর আজ সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা জানি জম্মু ও কাশ্মীরের মানুষ বিজেপির দ্বিচারিতা দেখেছে। এখন কেউ যদি বাইরে থেকে বিজেপির বিরোধিতা করার ভান করে, অথচ ভিতরে ভিতরে তাদের স্বার্থ রক্ষা করে, তাহলে তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে সাজাদ লোন বরাবরই এক ‘অস্বস্তিকর ফ্যাক্টর’। একদিকে তিনি ‘আঞ্চলিক দল’-এর নেতা হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চান, আবার অন্যদিকে বিজেপির প্রতি নরম মনোভাবের অভিযোগ তাঁর পিছু ছাড়ে না। এদিন ওমর আবদুল্লাহর বক্তব্য সেই ইস্যুকেই আরও উসকে দিল।

লোনের প্রতিক্রিয়া অবশ্য এখনও আসেনি। তবে তাঁর দলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, পিপলস কনফারেন্স মনে করছে এনসি নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন সাজাদ লোনকে টার্গেট করছে। অন্যদিকে, এনসি শিবির বলছে, “যিনি মাঠে নামেননি, তাঁর পক্ষ থেকে এখন ম্যাচ ফিক্সড বলাটা শুধু হাস্যকর নয়, রাজনৈতিকভাবে আত্মঘাতী।”

এই ঘটনার পর স্পষ্ট, রাজ্যসভার নির্বাচন ঘিরে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতি আবারও তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি ও এনসি–র মধ্যে আদৌ কোনো আঁতাত আছে কিনা, তা সময় বলবে। তবে সাজাদ লোন ও ওমর আবদুল্লাহর প্রকাশ্য বাকযুদ্ধ যে কাশ্মীরি রাজনীতিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।