কাশ্মীরি মুসলিমদের নিয়ে বিস্ফোরক আবদুল্লাহ

omar-abdullah-delhi-blast-remarks-kashmiri-civilians

শ্রীনগর: দিল্লি বিস্ফোরণ মামলায় জড়িতদের জন্য সবচেয়ে কঠোর শাস্তির দাবি জানালেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। তবে সঙ্গে সঙ্গে তিনি সতর্ক করলেন আতঙ্কবাদ দমনের নামে যেন নিরপরাধ সাধারণ মানুষ, বিশেষত কাশ্মীরি মুসলমানদের প্রতি অযথা সন্দেহ বা হয়রানি না করা হয়।

Advertisements

মঙ্গলবার শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন নৌগাম পুলিশ স্টেশনে গত শুক্রবার ঘটে যাওয়া আকস্মিক বিস্ফোরণে আহত পুলিশ কর্মী ও সাধারণ মানুষের খোঁজ নিতে।

   

Komaki MX16 Pro ই-ক্রুজার লঞ্চ হল, রেঞ্জ 220 কিমি, দাম কত?

মুখ্যমন্ত্রী জানান, উত্তরাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনেও তিনি একই বক্তব্য রেখেছেন। ওমর বলেন, “গতকাল নর্থ জোন সিএম কনফারেন্সে আমি এই বিষয়টি বিশেষভাবে তুলেছিলাম। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রসচিব, উত্তরাঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীরা, রাজ্যপালরা সবাই উপস্থিত ছিলেন। আমি স্পষ্টভাবে বলেছি, জে-কে-র প্রতিটি নাগরিককে, বিশেষত প্রতিটি কাশ্মীরি মুসলমানকে সন্দেহের চোখে দেখা উচিত নয়।”

তিনি আরও জানান, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেই লড়াই যেন কোনওভাবেই পুরো জনগোষ্ঠীকে অপরাধী বা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত না করে। তাঁর মতে, “জঙ্গিদের শাস্তি হোক কঠোরতম, কিন্তু একজন নির্দোষ মানুষের ক্ষতি যেন না হয় এটাই হওয়া উচিত সরকারের লক্ষ্য।”

ওমর আবদুল্লাহ গত সপ্তাহেই দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন যে, যারা এই হামলার পিছনে রয়েছে তারা যেন সবচেয়ে কঠোর শাস্তি পায়। তবে তিনি একইসঙ্গে বারবার বলে আসছেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুরো জনগোষ্ঠীকে কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদের সমর্থক বা এর অংশীদার হিসেবে দেখার প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

Advertisements

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, দিল্লি বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও, তদন্ত যেন নিরপেক্ষভাবে হয়। মানুষের মনে বিশ্বাস তৈরি করা জরুরি যে প্রশাসন সন্ত্রাসবাদ দমনে যেমন কঠোর, তেমনই নিরপরাধদের সুরক্ষার ক্ষেত্রেও সমান দায়বদ্ধ।

তিনি উদাহরণ হিসেবে নৌগাম থানার বিস্ফোরণের কথাও উল্লেখ করেন। সেই ঘটনার পরও সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানান, “মানুষের মনোবল টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিটি নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়া, এবং তাদের বিশ্বাস অর্জন করা সরকারের দায়িত্ব।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ওমর আবদুল্লাহর মন্তব্য কাশ্মীরি জনমানসের দীর্ঘদিনের অভিযোগ অযথা সন্দেহের পরিবেশ সেটিকেই তুলে ধরে। বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবাদ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কাশ্মীরি মুসলমানদের একটি বড় অংশ নিজেদের অবাঞ্ছিত নজরদারির শিকার মনে করে। ঠিক এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা আরও তাৎপর্যপূর্ণ।

দিল্লি বিস্ফোরণ মামলার তদন্ত ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা দেখছে। দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু এই কঠোরতার সঙ্গে ভারসাম্য রাখতে হবে মানবিকতারও এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন ওমর। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে শেষবার বলেন, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই এক। কিন্তু একথাও মনে রাখা দরকার কোনও নির্দোষ নাগরিক যেন শুধু পরিচয় বা অঞ্চলগত কারণে ভুক্তভোগী না হয়। আমরা চাই শান্তি, নিরাপত্তা এবং ন্যায় সব একসঙ্গে।”