কলকাতা: NRC আতঙ্কে গতকাল আত্মহত্যা করেছেন আগরপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ কর। এই অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে বাংলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। মঙ্গলবার বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় NRC নিয়ে রাজ্যে বিভ্রান্তি তৈরী করছেন। এই বিভ্রান্তির জেরেই মানুষ আতঙ্কে ভুগছেন। দিলীপ আরও বলেন যে মমতা রাজ্যে মৃত্যুর রাজনীতি করছেন।
বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায় তার একটি এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে বলেছেন “যে কোনো আত্মহত্যার ঘটনার ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত ছাড়া ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে ময়নাতদন্তের আগেই ঘোষণা করলেন এটি আত্মহত্যা?”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, “যদি মানুষটিকে খুন করে তার হাতে আত্মহত্যার চিরকুট গুঁজে দেওয়া হয়ে থাকে, তবে সেই সত্য কি আর সামনে আসবে? মুখ্যমন্ত্রীর আগাম মন্তব্যের পর কোনো ময়নাতদন্তকারী ডাক্তার কি আসল কারণ অনুসন্ধান করতে পারবেন?”
রাফায়েলে বিমানে উড়লেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, দেওয়া হল গার্ড অফ অনার
তথাগত রায়ের অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। তিনি বলেন, “তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই এটি আত্মহত্যা, তাহলেও পুলিশ কমিশনার নিজে স্বীকার করেছেন যে প্রদীপ কর অবসাদগ্রস্ত ছিলেন। এই অবসাদ কোনো সাধারণ মন খারাপ নয়, এটি ‘clinical depression’। একজন অপ্রকৃতিস্থ মানুষের কাজের উপর ভিত্তি করে মুখ্যমন্ত্রী এত বড় রাজনৈতিক বিবৃতি দিলেন কেন?”
প্রদীপ করের দিদির দাবি, ভাইটি NRC নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন। তিনি আশঙ্কা করতেন, তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। এই বক্তব্যও নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। তথাগত রায় বলেন, “একজন ৫৭ বছর বয়সি শিক্ষিত হিন্দু মানুষের পক্ষে এই ভাবনা অস্বাভাবিক। তাই মুখ্যমন্ত্রী একজন অস্বাভাবিক মানুষের কাজের ভিত্তিতে রাজনীতিক বিবৃতি দিচ্ছেন, এটা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন।”
বিজেপির তরফে আরও অভিযোগ উঠেছে যে, রাজ্য সরকার মৃত্যু নিয়ে রাজনৈতিক মুনাফা তুলতে চাইছে। অপরদিকে তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি মানুষের মনে NRC-র ভয় ঢুকিয়ে রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি করছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যারাকপুর ও আশপাশের এলাকায় ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট হবে। তবে রাজনৈতিক মহলে এই মৃত্যু এখন এক বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে সত্যিই কি এটি NRC আতঙ্কে আত্মহত্যা, না কি এর আড়ালে অন্য কোনো অন্ধকার রহস্য লুকিয়ে আছে?


