রাষ্ট্রগীতিতে নেহেরুর কাঁচি! মোদীর মন্তব্যে বিতর্ক

nehrus-vande-mataram-controversy

কলকাতা: সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের রাষ্ট্র গীতি বন্দে মাতরম নিয়ে ফাঁস করেছেন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রধানমন্ত্রী তার মন্তব্যে দাবি করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু মুসলিম লীগের মন রাখতে ভারতের রাষ্ট্র গীতির কিছু পঙতি কেটে বাদ দিয়ে দেন। ১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বন্দেমাতরম রচনা করেন বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বন্দে মাতরম গানটিতে ৫ টি পংতি লিখেছিলেন বঙ্কিম চন্দ্র।

Advertisements

ঠিক তার ১০ বছর পরে আনন্দমঠ গ্রন্থে এই গানটি যোগ করেন বঙ্কিম চন্দ্র এবং সাথে সাথেই এই গানের জনপ্রিয়তা এত ছড়িয়ে গিয়েছিল যে সেই সময় দেশ স্বাধীন করার মন্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া সংগ্রামীদের মুখে মুখে ঘুরতে লাগল। কিন্তু ১৯০৮ সালে মুসলিম লীগ এই বন্দেমাতরম গান নিয়ে শুরু করল বিরোধিতা। কারণ কি না মুসলিমরা এক ঈশ্বরবাদে বিশ্বাসী। বন্দেমাতরমে যেহেতু হিন্দু দেবদেবীর কথা আছে এবং দেশকে দেবী বা মাতৃকা বলা হয়েছে সেই কারণে এই গান মুসলিমদের জন্য নয়।

   

প্রধানমন্ত্রী মোদির হাতে উদ্বোধন ‘ESTIC ২০২৫’, ১ লক্ষ কোটি টাকার গবেষণা তহবিলের ঘোষণা

এক সময় বিরোধিতা এমন চরম সীমায় পৌঁছয় যে জিন্না নেহেরুকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে জিন্না স্পষ্ট বলেন যে ভারতের রাষ্ট্রগীতি হিসেবে বন্দেমাতরমকে বাদ দিতে হবে। ১৯৩৮ সালে এই বিরোধিতা মূলক চিঠির জবাব দিতে গিয়ে নেহেরু বলেন গত ৩০ বছর ধরে এই বন্দেমাতরমই ভারতের রাষ্ট্রগান হিসেবে গাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও এই গানটি ছাড়া ভারতের আর কোনো জাতীয় সংগীত নেই।

Advertisements

নেহেরু জিন্না কে প্রস্তাব দেন যে তিনি এই গানটি থেকে কিছু পঙতি সম্পূর্ণ কেটে বাদ দেবেন। যে কথা সেই কাজ। বন্দেমাতরমের মধ্যে একটি লাইন ছিল ‘ত্যং হি দুর্গা, দশ প্রহরণধারিনী, কমলা কমল দল বিহারিণী, বাণী বিদ্যা দায়িনী, নমামি ত্যং, নমামি কমলাং অমলাং সুজলাং সুফলাং মাতরম।’ এই লাইনটি এবং এই রকম আরও কিছু লাইন নেহেরু নাকি কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন জিন্নার মন রাখতে এমনটাই অভিযোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী তার মন্তব্যে আরও বলেছেন যে এই লাইনের মধ্যে দিয়ে দেশমাতৃকাকে মা দুর্গার সঙ্গে তুলনা করেছেন বঙ্কিম চন্দ্র। যা মুসলিম লীগের প্রধান জিন্নার অপছন্দ ছিল। তিনি বিস্ফোরক মন্তব্যে বলেছেন নেহেরু ভারতের নাগরিক হয়ে কিভাবে দেশের রাষ্ট্রগীতিতে কাঁচি চালাতে পারেন। মোদীর মন্তব্যে সরব হয়ে রাজনৈতিক মহল ও বলেছেন যে কংগ্রেস নেহেরুর নেতৃত্বে বরাবরই দেশদ্রোহীমূলক কাজ করে এসেছে সুতরাং এদের কাছ থেকে এর থেকে বেশি আশা করা ভারতবাসীর ভুল।