বিহারের খুশির আবহে জম্মু কাশ্মীরেও গেরুয়া ঝড়

nagrota-by-election-divyani-rana-landslide-win

পটনা: বিহারে এনডিএ-র ঐতিহাসিক জয়ে যখন সারা দেশে খুশির ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে, সেই আবহেই জম্মু-কাশ্মীর থেকে বিজেপি শিবিরে এল আরেকটি বড় সুখবর। রিয়াসি জেলার নাগরোটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দিব্যানি রানা এক কথায় বিপুল ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। এই জয় শুধু একটি আসন দখল নয়, বরং উপত্যকার রাজনীতিতে বিজেপির ক্রমবর্ধমান প্রভাবেরই প্রতিফলন।

Advertisements

১৯ বছর বয়সী দিব্যানি রানা এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচনে লড়লেন, আর প্রথমবারেই তৈরি করলেন ইতিহাস। নাগরোটা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তিনি মোট ৪২,৩৫০ ভোট পেয়েছেন, যা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে।

   

ফের বিয়ে করলেন তৃণমূলের জন বার্লা

স্বাধীন প্রার্থী অনিল শর্মা, যিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ, তিনি এদিন পিছিয়ে পড়েছেন ২৪,৬৪৭ ভোটে। অপর প্রার্থীদের অবস্থাও ছিল হতাশাজনক—জাতীয় প্যান্থার্স পার্টি, আপনি পার্টি, ন্যাশনাল কনফারেন্স কিংবা আম আদমি পার্টি কোনো দলই উল্লেখযোগ্য ভোট তুলতে পারেনি।

উল্লেখ্য, এই আসনটি খালি হয়েছিল বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা এবং প্রাক্তন মন্ত্রী কুলদীপ রাজ গুপ্তার মৃত্যুর পর। নাগরোটা ছিল তাঁর বহু বছরের এলাকা, তাই তাঁর মৃত্যুর পর এই কেন্দ্রের উপনির্বাচন রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল হয়ে দাঁড়ায়। বিজেপি সেই আবেগকেই কাজে লাগিয়ে তরুণ মুখ হিসেবে দিব্যানিকে প্রার্থী করে। এবং ফলাফল প্রমাণ করল দলীয় কৌশল ছিল নিখুঁত।

স্থানীয় মানুষদের মতে, দিব্যানির জয়ের অন্যতম কারণ তাঁর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি ও পরিবারিক জনপ্রিয়তা। দিব্যানি রানা রাজ্যের এক পরিচিত রাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। পাশাপাশি জম্মু অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর প্রতিফলনই দেখা গেল উপনির্বাচনে।

Advertisements

নাগরোটার এই জয়ের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শুধুমাত্র একটি উপ-নির্বাচনের ফল নয়—এটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিজেপির দৃঢ় ভিত্তি গঠনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বিশেষত অনুচ্ছেদ ৩৭০ প্রত্যাহারের পর জম্মু-কাশ্মীরের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। তরুণ ভোটার, নারী ভোটার এবং উন্নয়ন-মনস্ক মানুষের সমর্থন বিজেপির দিকে ঝুঁকছে—দিব্যানির জয় তারই ইঙ্গিত।

বিজেপি শিবিরে আনন্দ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। দক্ষিণ ও উত্তর কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় নেতাকর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন। পাটনা থেকে শ্রীনগর দুই জায়গাতেই সাফল্য উদযাপন হচ্ছে সমান তালে। বিহারের জয়ের পর নাগরোটার জয় যেন দলের উচ্ছ্বাস দ্বিগুণ করে দিয়েছে। বিজেপি দাবি করছে এই জয় প্রমাণ করে, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ উন্নয়ন, স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা চাইছেন। আর সেই মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করছে বিজেপিই।

নাগরোটার উপনির্বাচনে এমন বিশাল ব্যবধানের জয় অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। কারণ বিরোধী দলগুলো ভেবেছিল, বিজেপির প্রভাব হয়তো কিছুটা কমেছে। কিন্তু ফলাফল দেখিয়ে দিল উপত্যকায় বিজেপির জনসমর্থন আরও গভীর ও সংগঠিত হয়েছে। ভোট গণনা শেষ হতেই দিব্যানি রানা বলেন, “এটা শুধু আমার জয় নয়, এটা নাগরোটার মানুষের জয়। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি—এই এলাকার উন্নয়নই হবে আমার প্রথম লক্ষ্য।”

বিহার থেকে জম্মু দুই দিকেই বিজয়ের ডঙ্কা বাজিয়ে বিজেপি এখন আরও আত্মবিশ্বাসী। রাজনৈতিক মহলের মতে, ২০২৬ সালের দিকে এগোতে থাকা দেশীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে এটি বিজেপির পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল।