মোকামা হত্যাতে বিস্ফোরক অখিলেশ যাদব

mokama-murder-akhilesh-yadav-reaction-bihar-law-and-order

পটনা: বিহারের রাজনৈতিক মহলে ফের চাঞ্চল্য। মোকামা উপনির্বাচনের প্রচারণার মাঝখানে ঘটেছে এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড, যা শুধুমাত্র স্থানীয় রাজনীতিকে নয়, পুরো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মোকামা এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় জন সুরাজ সমর্থক দুলারচাঁদ যাদব নিহত হন।

Advertisements

এই ঘটনায় সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সভাপতি অখিলেশ যাদব তার বিস্ফোরক মন্তব্যে বিজেপি-জেডিইউ সরকারকে কঠোর সমালোচনা করেছেন। “যে জায়গায় প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী প্রচারণা করছেন, যেখানে জেজে সিকিউরিটির এমন ভিআইপি নেতারা প্রচারণায় নামছেন সেখানে যদি হত্যাকাণ্ড ঘটে, তাহলে এটা দেখিয়ে দেয় যে এটা ‘জঙ্গল রাজ’ না ‘মঙ্গল রাজ’,”।

   

খলিস্তানি সংগঠনের নিশানায় বিগ বি? নিরাপত্তা বাড়ানো হল বিগ-বি’র

তাঁর এই কথাগুলো যেন বিহারের রাজনৈতিক তাপমাত্রাকে আরও উত্তপ্ত করে তুলেছে, বিশেষ করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।মোকামা, বিহারের পটনা জেলার এই ছোট্ট শহরটি দীর্ঘদিন ধরে ‘বাহুবলী’ রাজনীতির জন্য কুখ্যাত।

এখানকার নির্বাচনী লড়াই সবসময়ই তীব্র এবং হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। গতকাল দুলারচাঁদ যাদব, যিনি একসময় আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ যাদবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন, জন সুরাজ প্রার্থী প্রিয়দর্শী পিয়ুশের প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন।

হঠাৎ দুই গ্রুপের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়, এবং গোলাগুলিতে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে জানা গেছে, তাঁর শরীরে গুরুতর অভ্যন্তরীণ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থলে অ্যান্ট সিং এবং তাঁর দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যা নিহতের নাতির বক্তব্যের ভিত্তিতে।

Advertisements

কিন্তু অ্যান্ট সিং কাউন্টার এফআইআর দায়ের করে বলেছেন, জন সুরাজ প্রার্থীর সমর্থকরাই তাঁকে আক্রমণ করতে চেয়েছে। এদিকে, আরজেডি প্রার্থী বীণা দেবীর কনভয়ও পান্ডারক এলাকায় আক্রান্ত হয়েছে, যা স্থানীয় অশান্তিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। পুলিশ এখন এলাকাকে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করেছে, কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, ভয়ের ছায়া এখনও অপসারিত হয়নি।

অখিলেশ যাদবের এই মন্তব্যটি শুধুমাত্র সমালোচনা নয়, বরং বিহারের আইনশৃঙ্খলার একটি তীক্ষ্ণ ছবি তুলে ধরে। তিনি বলেছেন, “এমন জায়গায় যেখানে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রচারণা করে যাচ্ছেন, সেখানে সাধারণ কর্মীরা নিরাপদ নন এটা সরকারের ব্যর্থতা। প্রধানমন্ত্রী সবসময় ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের কথা বলেন, কিন্তু এই ইঞ্জিন তো রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে।”

তাঁর কথায় উঠে এসেছে বিহারের পুরনো ‘জঙ্গল রাজ’-এর ছায়া, যা নিতীশ কুমারের জেডিইউ-বিজেপি জোটের সময়েও ফিরে আসছে বলে অভিযোগ। জন সুরাজ নেতা প্রশান্ত কিশোরও এই ঘটনাকে ‘জঙ্গল রাজ’-এর প্রমাণ বলে অভিহিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, “দুলারচাঁদ যাদব জন সুরাজের অফিসিয়াল কর্মী ছিলেন না, কিন্তু তিনি আমাদের প্রার্থীকে সমর্থন করছিলেন। এটা গণতন্ত্রে হিংসার কোনো স্থান নেই। বাহুবলীরা ভালো মানুষের সঙ্গে লড়তে ভয় পায়।” কংগ্রেস নেতা অখিলেশ প্রসাদ সিংও এটিকে ‘রাজনৈতিক হত্যা’ বলে হাইকোর্টের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।