Monday, December 8, 2025
HomeBharatদলীয় দাসত্বের বিরুদ্ধে নয়া বিলের প্রস্তাব কংগ্রেস সাংসদের

দলীয় দাসত্বের বিরুদ্ধে নয়া বিলের প্রস্তাব কংগ্রেস সাংসদের

- Advertisement -

নয়াদিল্লি, ৭ ডিসেম্বর: ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে বহুদিন ধরেই একটি অভিযোগ ঘুরে বেড়াচ্ছে(Manish Tewari Anti-Defection Bill)। দলের হুইপের চাপে নির্বাচিত এমপি-রা নিজের মত প্রকাশ করতে পারছেন না, কোনও বিল বা প্রস্তাবের যুক্তি-তর্কে স্বাধীনভাবে অংশ নিতে পারছেন না, এমনকি ভোট দেওয়ার সময়ও ব্যক্তিগত বিবেক বা জনগণের মতামত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন না। এই ‘দলীয় দাসত্ব’-এর সংস্কৃতি ভাঙতেই ফের সামনে এল কংগ্রেস সাংসদ মানীশ তিওয়ারির নতুন প্রচেষ্টা।

শুক্রবার লোকসভায় নিজের প্রাইভেট মেম্বার্স বিল পেশ করে তিওয়ারি জানিয়ে দিলেন সময় এসেছে অ্যান্টি-ডিফেকশন আইনের বড়সড় সার্জারি করার। তাঁর বিলের মূল বক্তব্য, সরকার টিকে থাকা সম্পর্কিত নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় ছাড়া অন্য কোনও ভোটে দলের হুইপ বাধ্যতামূলক হবে না। এমপি-রা স্বাধীনভাবে, নিজের বিবেক, যুক্তি এবং নিজের নির্বাচনী এলাকার মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ভোট দিতে পারবেন।

   

নিলামে এই তিন ক্রিকেটারের জন্য টাকা ঝুলি খুলতে পারে শাহরুখের দল!

তিওয়ারির প্রস্তাব অনুযায়ী, কেবলমাত্র আস্থা প্রস্তাব, অনাস্থা প্রস্তাব, মুলতুবি প্রস্তাব, মানিবিল এবং আর্থিক বিষয়ক যেকোনও বিল এই নির্দিষ্ট বিষয়গুলিতে হুইপ অমান্য করলে এমপি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। বাকিগুলোতে তারা স্বাধীন। এমন প্রস্তাব এর আগে ২০১০ ও ২০২১ সালেও উত্থাপন করেছিলেন মানীশ তিওয়ারি। কিন্তু এবার তিনি আরও জোরালো ভাষায় জানিয়েছেন— “সংসদ সদস্যদের একঘেয়ে সংখ্যায় পরিণত করে দেওয়া হয়েছে। তারা আর আইন প্রণেতা নন, তারা ‘ডিভিশন বেল’-এর প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল যন্ত্রমাত্র।”

“গণতন্ত্রে চূড়ান্ত ক্ষমতা কার ভোটার নাকি দল?” এমনই তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তিওয়ারি। তাঁর মতে “গণতন্ত্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোটারের। যে মানুষ রোদে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ভোট দেন, তিনি চান তাঁর প্রতিনিধি স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু বর্তমান সংসদে এমপি-দের অবস্থা ‘হুইপ-চালিত দাসত্ব’ ছাড়া আর কিছুই নয়।” তিওয়ারি সরাসরি বলেছেন সংসদ এমন যেন হয়ে উঠেছে যেখানে আইন প্রণয়ন নয়, বরং দলের নির্দেশ পালনই একমাত্র কাজ।

বিলে উল্লেখ করা হয়েছে কোনও বিধান লঙ্ঘন হলে স্পিকার বা চেয়ারম্যান হাউসের মধ্যেই ঘোষণা করবেন যে সদস্যপদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে গেল। সংশ্লিষ্ট এমপি ১৫ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন। স্পিকার/চেয়ারম্যান ৬০ দিনের মধ্যে সেই আপিল নিষ্পত্তি করবেন।

অর্থাৎ, পুরো প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং স্পষ্টতা আনতেই এই নতুন কাঠামো। বর্তমান অ্যান্টি-ডিফেকশন আইন রাজনৈতিক দলগুলিকে বিপুল ক্ষমতা দিয়েছে। ফলে এমপি-রা কোনও বিলের বিরুদ্ধে যেতে ভয় পান। দলনেতার নির্দেশই চূড়ান্ত হয়ে দাঁড়ায়। প্রকৃত বিতর্ক প্রায় শূন্য। কমিটি ও সংসদীয় আলোচনার মান কমে গেছে। তিওয়ারির দাবি “এই বিল সংসদকে ফের জীবন্ত করে তুলবে”।

তিনি বলেছেন “এমপি-দের আবার ‘বিবেক, জনগণের মতামত এবং সাধারণ বুদ্ধির’ ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ ফেরানোই আমার লক্ষ্য।” বিলটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা কতটা, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই আলোড়ন শুরু হয়েছে। বেশ কিছু সাংসদ গোপনে স্বীকার করেছেন এই আইন বদল হলে সংসদ আরও প্রাণবন্ত হবে। দলীয় নেতৃত্বের শাসন কমবে এবং বিতর্কের মান বাড়বে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular