প্রতি বছরের মতো এবছরও সংবিধান দিবসের উপলক্ষে রাজ্য এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিত হল সংবিধান সংক্রান্ত অনুষ্ঠান। এই বিশেষ দিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে ডঃ বি. আর. আম্বেদকর-এর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। হাতে সংবিধান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা ও ন্যায়বিচারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে সংবিধান রক্ষার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, “যাঁরা ক্ষমতায় আছে, তাঁরা স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেননি। তাই তাঁরা স্বাধীনতার অর্থ, সংগ্রামের ইতিহাস এবং তার মূল্য পুরোপুরি বোঝেন না। স্বাধীনতার এত বছর পরও নাগরিকত্বের প্রমাণের মতো বিষয় নিয়ে নাগরিকদের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। এটি অত্যন্ত ন্যায্য নয়।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “গণতন্ত্রকে যে কোনও মূল্যে রক্ষা করতে হবে। এটি আমাদের দায়িত্ব এবং দায়িত্বজ্ঞানপ্রবণ নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের অবশ্য পালনীয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভাষণ নয়, বরং এটি সংবিধান এবং গণতন্ত্রের রক্ষার একটি সুস্পষ্ট বার্তা হিসেবে গ্রহণ করা হচ্ছে। সংবিধান দিবসে এই ধরনের বার্তা দেশের সকল নাগরিককে মনে করিয়ে দেয় যে, সংবিধান আমাদের মূলনীতি, যা সবসময় রক্ষা করা প্রয়োজন। সংবিধান আমাদের অধিকার এবং দায়িত্বের প্রতিফলন। মমতার এই বার্তা প্রমাণ করে যে, রাজনীতিকদের দায়িত্ব কেবল ক্ষমতায় থাকা নয়, বরং দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র এবং নাগরিকদের অধিকার রক্ষাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
রেড রোডে সংবিধান হাতে নিয়ে ডঃ বি. আর. আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতন্ত্রের অব্যাহত গুরুত্বের কথাও স্মরণ করান। তিনি উল্লেখ করেন, সংবিধান মানেই কেবল আইন নয়; এটি দেশের ইতিহাস, স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং নাগরিকদের অধিকার ও দায়িত্বের প্রতীক। এই দিনে শুধু শ্রদ্ধা নয়, বরং সংবিধানের মূলমন্ত্র অনুযায়ী জীবন যাপন এবং দেশের সুশাসন নিশ্চিত করা আমাদের প্রয়োজন। রাজ্য ও দেশের নাগরিক সমাজে এই বার্তা ইতিমধ্যেই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান দিবসে এমন বার্তা দিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতীক তৈরি করেছেন যা সকলকে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, সংবিধান রক্ষা করা আমাদের সকলে একটি নৈতিক এবং সামাজিক দায়িত্ব। আজকের দিনে সংবিধানকে সম্মান জানানো মানে আমাদের গণতন্ত্রকে চর্চা করা এবং সুরক্ষিত রাখা।
মমতার এই বার্তা শুধু রাজনৈতিক মহলে নয়, সাধারণ মানুষকেও উদ্বুদ্ধ করছে। নাগরিকরা বুঝতে পারছেন যে, সংবিধান এবং গণতন্ত্র রক্ষায় সকলে জড়িত। শুধুমাত্র আইন প্রয়োগই নয়, জনগণকে সচেতন হওয়া এবং সংবিধানকে যথাযথভাবে পালন করা জরুরি। মুখ্যমন্ত্রীর কথাগুলো দেশের সকল নাগরিককে মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, স্বাধীনতা অর্জনের সংগ্রাম সহজ ছিল না এবং সেই সংগ্রামের মূল্য আজও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
