Monday, December 8, 2025
HomeBharatনেহেরুকে আড়াল করে বন্দেমাতরম নিয়ে বিতর্ক উস্কালেন মমতা

নেহেরুকে আড়াল করে বন্দেমাতরম নিয়ে বিতর্ক উস্কালেন মমতা

- Advertisement -

কলকাতা: নেহেরু নয়, বন্দেমাতরমে কোন কোন পঙতি থাকবে তা ঠিক করেছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Mamata Banerjee Vande Mataram)। সোমবার কোচবিহার যাত্রার আগে সাংবাদিকদের সামনে এই মন্তব্য করলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। মমতার এই মন্তব্যেই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিরোধী পক্ষ বিজেপি মমতার এই বক্তব্যকে সত্যের অপলাপ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তারা বলেছেন মমতা ইতিহাস বিকৃত করছেন।

ইতিহাস বলছে মুসলিম লীগের নেতা মহম্মদ আলী জিন্নার আপত্তিতে তাকে খুশি করতে বন্দেমাতরমে কাঁচি চালান নেহেরু। যে পঙতিগুলিতে ভারত মায়ের বন্দনা করে সংস্কৃত শ্লোকের ব্যবহার করেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র, তা বাদ দিয়ে দেন জওহরলাল নেহেরু। বিজেপির নেতৃত্ব এই ইতিহাস বিকৃতিকে ইস্যু করে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে যে প্রত্যেকেই জানে যে মমতা বন্দোপাধ্যায় মুসলিম তোষণকারী। তাই এই ধরণের সত্যের অপলাপ তার পক্ষেই করা সম্ভব।

   

ভিক্ষায় ‘সেরা’ পাকিস্তান, প্রথম দশে বাংলাদেশ–আমেরিকা–ফ্রান্স! তালিকায় নেই ভারত

এদিন বন্দেমাতরম নিয়ে মমতা আরও বলেন “আজ সংসদে শুনলাম কিছু বিজেপি নেতা নাকি নেতাজিকে পছন্দ করেন না। তাদের কটাক্ষ করে মমতা বলেন “নেতাজিকে মানেন না, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মানেন না, রাজা রামমোহন রায়কেও মানেন না তাহলে আসলে আপনি কাকে মানেন?” তিনি দাবি করেন, বন্দেমাতরম, জন গণ মন সবই ভারতের বহুত্ববাদী সংস্কৃতির প্রতীক, আর এই প্রতীকী ঐতিহ্যকে বিভক্ত করার চেষ্টা করা উচিত নয়।

অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে, এই বিতর্ক আসলে ইতিহাস নিয়ে রাজনৈতিক দখলদারির লড়াই। তাদের মতে “একদিকে বিজেপি নেহেরুকে ‘appeasement’-এর প্রতীক হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে, অন্যদিকে মমতা চাইছেন রবীন্দ্রনাথের নামকে সামনে এনে কংগ্রেসের উপর থেকে চাপ সরাতে।” তবে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন রাষ্ট্রগীতের ১৫০ বছর পূর্তির দিনে রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি দোষারোপে কি মূল অনুভূতি ঢাকা পড়ে যাচ্ছে না?

বন্দেমাতরম বিতর্ক ভারতীয় ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। গানটির অংশ নিয়ে, ব্যবহার নিয়ে, এমনকি সাংবিধানিক মর্যাদা নিয়েও বহুবার রাজনৈতিক সংঘাত হয়েছে। কিন্তু এবার মমতার মন্তব্য এবং বিজেপির তীব্র কটাক্ষ এই বিতর্ককে আরও সামনে ঠেলে দিয়েছে। কোচবিহারের জনসভায় যাওয়ার আগে মমতা জানান “গান, কবিতা, সাহিত্য এগুলোকে ভোটরাজনীতির যন্ত্র বানানো ঠিক নয়। দেশ যে অনেক বড়, তা ক্ষমতাসীনদের মনে রাখা উচিত।”

বিজেপির মতে, এই মন্তব্যই প্রমাণ করে মুখ্যমন্ত্রী ইতিহাসের ব্যাখ্যাকে নিজের মতাদর্শিক সুবিধার দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছেন। বন্দেমাতরম বিতর্ক যে বাংলা–দিল্লির রাজনৈতিক সম্পর্ককে আরও তীক্ষ্ণ করবে, তা পরিষ্কার। বিজেপির এক শীর্ষ নেতা বলেন “এই ইস্যুতে আমরা সংসদেও কথা বলব, রাজ্যেও বলব। দেশের আবেগ নিয়ে খেলা মেনে নেওয়া হবে না।” অন্যদিকে তৃণমূল শিবির বলছে বিজেপি ভুল তথ্য ছড়িয়ে নিজেদের রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular